জলপাইগুড়ি: প্রতিমা বিসর্জনের সময় হঠাৎই জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বান ( Harpa Ban incident)। জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ আরও অনেকে। আশঙ্কা, আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মালবাজারের ক্যালটেক্স মোড়ে। এই ইস্যুতে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে সরব বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই মৃতের পরিবার এবং আহতদের উদ্দেশ্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন। তবে এর পরেপরেই এই ঘটনায় ফের টুইট করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।


প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন, জলপাইগুড়ির মাল নদীতে  বিসর্জনের মুহূর্তে হড়পা বানে ৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।  মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শান্তি কামনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ১৩ জন  এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, 'আমি ওনাদের দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করি। এই মুহূর্তে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এখনও খোঁজ এবং তল্লাশি কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।' মৃতের নিকট আত্মীয়কে ২ লক্ষ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এরপরেই এবার টুইটে তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার তিনি বগটুইকাণ্ড টেনে শুভেন্দু বলেন, 'রামপুরহাটের বগুটুইতে নিজে ছুটে গিয়ে চেক বিলি করলেন, এখানে তেমন করলেন না কেন মাননীয়া ? এদের দোষ কী ? মা দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে মারা যাওয়ার জন্য এদের গুরুত্ব আপেক্ষিকভাবে কম ? আমার দাবি হল প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য, এই বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ অন্তত ১০ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত।'






গতকালও শুভেন্দু টুইট করে বলেন, 'এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে, বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমি জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও রাজ্যের মুখ্যসচিবকে উদ্ধার প্রক্রিয়া জোরদার করা ও দুর্দশাগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।'স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে ১০ বছরের এক বালিকা রয়েছে। গতকাল মাঝরাত পর্যন্ত চলে উদ্ধারকাজ। তারপর প্রবল বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ সাময়িক বন্ধ হয়। আজ সকালে নদীর বিভিন্ন অংশে চালানো হবে তল্লাশি। পুলিশ সূত্রে খবর, ৭০টি প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আনা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি প্রতিমা বিসর্জনের পরই বিপর্যয় ঘটে। জলপাইগুড়ির মাল নদীতে গতকাল প্রতিমা বিসর্জনের সময় ৮ জন সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ছিলেন ঘটনাস্থলে। সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে দড়ি ছাড়া কিছু ছিল না। বিপর্যয় যখন ঘটে, তখন যদি সিভিল ডিফেন্সের আরও কর্মী থাকতেন, তাহলে দ্রুত উদ্ধারকাজ করা যেত বলে তাঁর দাবি। 


আরও পড়ুন, কোথা থেকে এত টাকা পেয়েছিলেন অনুব্রতর দেহরক্ষী ? আজ জেলে গিয়ে সায়গল হোসেনকে জেরা ইডি-র


এই বিপর্যয় নিয়ে স্থানীয় সূত্রে একটা সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নদীখাতে আগেই বোল্ডার ফেলা হয়েছিল, যাতে, যেদিকে বিসর্জন হবে, সেদিকে বেশি জল থাকে। হড়পা বানের সময় তা হিতে বিপরীত হয়েছে।  যেখানে বিসর্জন হচ্ছিল, সেদিকেই প্রবল স্ত্রোত এসে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। কয়েকদিন আগেই এই নদীতে হড়পা বান হয়। তারপরও কেন বিসর্জনের সময় বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠছে।