মলয় চক্রবর্তী ও সনৎ ঝা, জলপাইগুড়ি: বেহাল রাস্তা। বর্ষায় হাল আরও খারাপ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এমনকী প্রাণহানি ঘটছে বলেও দাবি স্থানীয়দের। অবিলম্বে রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে, শুক্রবার, জলপাইগুড়ির বাড়িভাষায় রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয়রা। এবারের ভোটে বিজেপি পঞ্চায়েত দখল করায়, উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, অভিযোগ উপপ্রধানের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। 


রাস্তাময় এমন বড় বড় গর্ত, যেন গোটা গাড়ির চাকাটাই ঢুকে যাবে, আর বর্ষা হলে তো কথাই নেই। যেন রাস্তার ওপরেই আস্ত এক একটা পুকুর। আর এই ভয়ঙ্কর রাস্তাতেই প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হয়েছে প্রাণহানি বাড়ছে আহত, জখমের সংখ্য়া। 


অবিলম্বে রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে, শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির বাড়িভাষায় বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে, আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এই রাস্তা ধরেই সিকিম বা কালিম্পঙে যেতে হয়। রাস্তার ওপর রয়েছে অজস্র স্কুল, হাসপাতাল, বাজার, এমনকী FCI-এর গোডাউন। সেই রাস্তার এই হাল। প্রায়ই উল্টে যাচ্ছে গাড় ভ্য়ান। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার মুখে পড়ছে স্কুলের পুলকার। প্রতিবাদে, এদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় অবরোধ। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে একের পর এক মালবাহী গাড়ি। 


জলপাইগুড়ির বাড়িভাষার ব্যবসায়ী আশিস হালদারের কথায়, আন্ডারপাসের কাছ থেকে ১ কিলোমিটার রাস্তা আজকে নতুন না এটা, কয়েক বছর ধরে এক অবস্থা। এত বড় বড় গর্ত। একটা পুকুরই বলতে পারেন। এই রাস্তার জন্য় টোটোতে কাস্টমার আসে না। কিছুদিন আগে কতগুলো বাচ্চা দুর্ঘটনায় মারা গেল। হাত পা ভাঙা তো লেগেই গেছে। মরলেই সবাই আসে। রোজ হচ্ছে এটা। কালকেও ৩ জন আহত হয়েছে। 


বাড়িভাষার বাসিন্দা রবীন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলছেন, প্রত্য়েকদিন ৫-৬টা দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তার অবস্থা তো দেখছেন। রাজ্য় হোক বা কেন্দ্র, এর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। আশ্বাস দিলে হবে না। কাজ করতে হবে। কেউ মরে যাচ্ছে, কেউ পড়ে যাচ্ছে। কাজ কোথায় হচ্ছে? 


এই এলাকাটি ডাবগ্রাম ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। যেটি কিনা এবারের ভোটে তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, সেই রোষেই রাস্তা সারানোর কাজ করতে দিচ্ছে না তৃণমূল। বাড়ানো হচ্ছে না বরাদ্দ। 


ডাবগ্রাম ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি নেতা ও উপপ্রধান সুপেন রায়ের কথায়, পথ অবরোধ তো হবেই। সাধারণ মানুষ যেতে পারছে না। বারবার বলা সত্ত্বেও রাস্তার কাজ হচ্ছে না। আমরা তো কম চেষ্টা করিনি। এটা নাকি ভিআইপি রোড। নজরে পড়া সত্ত্বেও, এখানে হিংসা চলছে। এখন কাজ করলে চুরি করতে পারবে না, আমরা যেহেতু অঞ্চলের ক্ষমতায়..করতে দিচ্ছে না। রাস্তার কাজ হবে কী? 


ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির ব্লক সভানেত্রী  সুধা সিংহ চট্টোপাধ্য়ায় বলছেন, উনি কী করে জানলেন রাস্তাটা হবে না? টেন্ডার হয়েই রয়েছে। ওপেন হলেই রাস্তা হবে। আমরা তো জনগণের জন্য়ই কাজ করি। রাস্তাটা ২ বছর আগে রিপেয়ার হয়েছিল। ১৪ লক্ষ টাকায়। সেখানে এত হেবি ওয়েট গা়ড়ি যায়, রাস্তাটা মজবুত করে, বানানো দরকার। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো এই আকচা আকচি বোঝে না। তাঁদের একটাই দাবি, দ্রুত রাস্তা সারানো হোক। দুর্ভোগ দূর হোক।