উত্তরবঙ্গ: জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড় (Jalpaiguri Storm) বিপর্যয়ের জেরে মৃত ৫ , আর্থিক সহায়তার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। ইতিমধ্যেই চালসা থেকে আলিপুরদুয়ারের দিকে রওনা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দিকে রওনা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোাপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।

  


গতকাল দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ আকাশ কালো করে ঝড় ওঠে। চার মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে যায় জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘূর্ণিঝড়ে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত ময়নাগুড়ির বার্নিশ গ্রাম। ভেঙে পড়েছে কয়েকশো বাড়ি। প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎহীন একাধিক এলাকা। এলাকার ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে গভীর রাতে বার্নিশ গ্রামে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন এলাকাবাসীর সঙ্গে। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  আহত শতাধিক। ভেঙে পড়েছে কয়েকশো বাড়ি। প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবের চিহ্ন সর্বত্র।কোথাও উল্টে পড়ে আছে গাড়ি। প্রচুর গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। 


প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছিল রাজ্য। সাম্প্রতিককালে কয়েকমিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর একটি এলাকা। ঝড় হয়েছিল দুর্গাপুরেও। তবে সাম্প্রতিককালে যতগুলি ঝড় হয়েছে, তার মধ্যে জলপাইগুড়ির এই ঘূর্ণিঝড় ভয়াবহ।মিনিট চারেকের প্রলয়। আর তাতেই লন্ডভন্ড উত্তরবঙ্গের তিন জেলা। ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে কয়েকশো ঘরবাড়ি। কোথাও টিনের চাল উড়ে গিয়ে পড়েছে গাছের মাথায়। উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে প্রচুর গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল। চারদিকে শুধু ধ্বংসলীলার ছবি। রবিবার বিকেলে কয়েক মিনিটের ঝড়। একেবারে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ে গেছে জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সেনপাড়ার একাধিক বাড়ি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। 


আরও পড়ুন, ঘূর্ণিঝড়ে-বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ি মুখ্যমন্ত্রী যেতেই তোপ শুভেন্দুর, বললেন..


জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলেন, আমরা দিশা পাচ্ছি না। কোন দিকে যাব। বাচ্চাটা চেঁচাচ্ছে, মা কী করব এখন, মারা যাব নাকি আমরা? বাঁচব না মনে হয়। তখন ওই কোণার মধ্যে গিয়ে লুকিয়েছি। বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাব? আমার ছেলে নেই, আমার স্বামী নেই, এখন কী করি? তখন মেয়েকে ডাকি। মেয়ে রাস্তা থেকে বাড়ি আসতে পারছে না। এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা ওহিদুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি বলতে আর কিছুই নেই। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁর স্ত্রী। গুরুতর জখম মহিলার স্বামী ওহিদুল ইসলাম বলেছেন, ও বাড়িতে আসতে না পেরে মুদিখানার দোকানে লুকিয়েছিল। দোকান শুদ্ধ চাপা পড়ে গেছে ওর উপরে, গাছ পড়েছিল। প্রায় আধঘণ্টা পরে অন্য লোক উদ্ধার করেছে। প্রবল ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আলিপুরদুয়ারের ১ নম্বর ব্লকের তপসিখাতা, কুমারগ্রামের উত্তর হলদিবাড়ি ও ফালাকাটার জটেশ্বর এলাকায়।