রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : মানুষের কাছে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাঁদেরকেই পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দেওয়া হবে। নিজের লোককে পঞ্চায়েত প্রধান বানিয়ে দাদাগিরি করব, ওটা চলবে না। দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ। একাধিক লবি আছে, জেলা সভানেত্রীর কথা দলের কেউ শোনে না। তৃণমূলকে কটাক্ষ বিজেপির।
বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে দলের নেতা-কর্মীদের কাছে কড়াবার্তা দিলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া গোপ। তাঁর বার্তা, মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করেন, তাঁদেরই প্রার্থী করা হবে। কাজ না করলে, নেতাদের পছন্দের লোক হলেও টিকিট মিলবে না। মঞ্চ থেকেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, 'মানুষ যাদেরকে ভালবাসবে, যাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা স্বচ্ছতা আছে, যারা মানুষের জন্য কাজ করবে তাদেরকেই দল এবার টিকিট দেবে। ও আমার পছন্দের, ও আমার কথা শুনে চলবে, ওকে আমি টিকিট দিয়ে দিলাম, ওকে প্রধান বানিয়ে দিলাম এটা চলবে না।'
পয়লা অগাস্ট কলকাতায় অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক হয় দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের জেলা নেতৃত্বের। জলপাইগুড়ি ফিরেই লাটাগুড়ির পার্টি অফিসে, নেতা-কর্মীদের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সতর্ক করে দেন মহুয়া গোপ। তিনি বলেন, 'নিজের লোককে পঞ্চায়েত প্রধান বানিয়ে দিয়ে আমি বেশি দাদাগিরি করব, ওটা চলবে না, হবে না। এটা রাজ্য থেকেই ঘোষণা এটা সবাইকে জানতে হবে। ভালো লোককে, গ্রহণযোগ্যতা লোককে দল দায়িত্ব দেবে, দল টিকিট দেবে, এটা রাজ্য থেকে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ।'
জেলার সভানেত্রী বক্তব্যের মাঝেই এক তৃনমূলকর্মী ঠিকাদারি বন্ধ নিয়ে মন্তব্য করেন। উল্টোদিক থেকে তারও কড়া জবাব আসে। তিনি বলেন, 'ঠিকাদারি ইউনিয়নের সাথে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। সংগঠন সংগঠনের মতো চলবে, যারা দলে কাজ করবে প্রফেশনালি কাজ করতে হবে।'
প্রসঙ্গত, ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে জলপাইগুড়ি জেলায়, একছত্রভাবে জয় হয়েছিল তৃণমূলের। ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তাদের দখলে রয়েছে ৭৬টি। বিজেপির দখলে রয়েছে ৪টি। কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে, জলপাইগুড়ি জেলার ৭টি কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জেতে চারটিতে আর তৃণমূল তিনটিতে। এই প্রেক্ষাপটেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পঞ্চায়েত ভোট করার বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। জলপাইগুড়ির বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ বলেছেন, 'সভানেত্রীর কথা কে শুনবে, এখানে সাত খানা লবি আছে তাদের কে এক জায়গায় করতে পারেন নি, সভানেত্রী কে ঘিরেই গন্ডগোল চলছে, কেউ কাউকে মানেন না, এই বার্তা লোক দেখানো ভাওতা একটা, চিট করার ভাঁওতা।'
তৃণমূলের অনেক নেতাই, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কি তা দেখা যাবে? উত্তর মিলবে আগামী বছর।