রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : কোন অসুখের কারণে জলপাইগুড়িতে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা? কারও গায়ে জ্বর তো কারও পেট খারাপ। কেউ আবার ঘন ঘন বমিও করছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে ১২১ জন শিশু ভর্তি। কী কারণে তারা জ্বরে (Fever) আক্রান্ত হচ্ছে সেই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শান্তনু হাজরা  জানিয়েছেন যে, জ্বরে আক্রান্ত কোনও শিশুর শরীরেই করোনা ভাইরাসের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ঠিক কী কারণে তারা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, তা জানার জন্য খুব শীঘ্রই কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনে পাঠানো হবে শিশুদের সোয়াব। তিনি আরও জানাচ্ছেন যে, কারও মধ্যে করোনার (Coronavirus) লক্ষণ না দেখা গেলেও কেউ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জাপানি এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে কিনা, তা জানতেই শিশুদের লালারসের পরীক্ষা করা প্রয়োজন।


Jalpaiguri: জ্বর, বমি থেকে পেট খারাপের সমস্যা, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ভর্তির সংখ্যা


শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়ির জ্বর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলা হাসপাতালে আসেন মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ চিকিৎসকের প্রতিনিধি দল। হাসপাতালের শিশু বিভাগও তাঁরা ঘুরে দেখেন। সমস্ত পরিস্থিতি দেখার পর উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে জানান ডাক্তার শান্তনু হাজরা। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণেই শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে মত তাঁর। যদিও তারপরেও একটা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলে তিনি বলেন, 'করোনার কোনও লক্ষণ নেই শিশুদের মধ্যে। আপাতত মনে করা হচ্ছে আবহাওয়ার কারণেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। তবে, ডেঙ্গু কিংবা চিকুনগুনিয়া কিংবা জাপানি এনসেফালাইটিসেরও একটা সম্ভাবনা থাকছে। তাই যতক্ষণ না শিশুদের লালারসের পরীক্ষার ফল জানা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।' পাশাপাশি এই রোগগুলো ছাড়া যদি অন্য কোনও রোগের প্রকোপ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই চিন্তার বিষয় রয়েছে বলে মত তাঁদের।


আরও পড়ুন - Weather Update: ওড়িশায় স্থলভাগে ঢুকল গভীর নিম্নচাপ, দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস


প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের করুণ অবস্থা। কারও গায়ে ধুম জ্বর। কোনও শিশু ভুগছে পেটের অসুখে। কেউ বা আবার ঘনঘন বমি করছে। রোগীর ভিড়ে প্রায় সব বেডই ভর্তি শিশু ওয়ার্ডের। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে ১২১ শিশু জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ১-৯ বছর বয়সী শিশুরাই বেশি অসুস্থ হচ্ছে। মূলত জলপাইগুড়ি সদর ব্লক, ময়নাগুড়ি ও ধূপগুড়িতে অসুস্থতার সংখ্যা বেশি। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় শিশু ওয়ার্ডে বাড়ানো হয়েছে আরও ৫৫টি বেড। ফলে এই মুহূর্তে বেডের সংখ্যা ১৭৬।