সুকান্ত দাস, হিন্দোল  দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা:  জয়নগরে জোড়া খুনের ঘটনায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাকভোরে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময়, বাড়ির কাছেই গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তাড়া করে এক দুষ্কৃতীকে ধরে বেধড়ক মারতে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। তাতে মৃত্যু হয় ওই হামলাকারীর।  এরই  মধ্যে অপর এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তাতে জনতার রোষ প্রশমিত হয়নি। জোড়া খুনকে কেন্দ্র করে ভয়ঙ্কর উত্তেজনা ছড়ায় ।


বেলা বাড়তেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জয়নগর। তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরপর বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। ফিরিয়ে দেওয়া হয় দমকলের গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে এখন এলাকা জুড়ে বিরাট পুলিশ বাহিনী। সঙ্গে রয়েছে ব়্যাফও। 

মৃত সইফুদ্দিন লস্কর তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি। তিনি ছিলেন সইফুদ্দিনের স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ নমাজ পাঠের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর। অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৪-৫ জন দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির। 

খুনের কারণ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। মৃত তৃণমূল নেতার বাবার দাবি, সিপিএম ও বিরোধীরাই খুনের জন্য দায়ী। একই দাবি করেছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক সওকত মোল্লাও। যদিও বারুইপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক বিভাস সর্দার দুষ্কৃতীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন। খুনের কারণ খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।  


রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি


তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সওকত মোল্লা আঙুল তুলেছেন সিপিএম এবং বিজেপির দিকে। তাঁর দাবি 'সিপিএম এবং বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধীরা সইফুদ্দিনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। এর মূল উদ্দেশ্য হল এটাই যে গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কারণ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়, তাদের পায়ের তলার মাটি নেই।'


তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের বগটুই গ্রাম। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। ২০২২-এর ২১ মার্চ, বগটুইয়ের সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। 'অন্তর্দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় দুষ্কৃতীদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিশানা করেছে শাসক দল', অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনেরদাবি, তৃণমূল নেতা খুনের পর জনরোষেই এই হামলা।