উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর, দলুয়াখাকিতে ঢুকতে পারেনি সিপিএমের প্রতিনিধিদল। চাল-ডালের জন্য হাহাকার করতে থাকা গ্রামে শুক্রবার ত্রাণ নিয়ে ঢুকতে পারলনা কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলও। পুলিশের সঙ্গে বচসার পর, ত্রাণ না দিয়েই ফিরতে হল কংগ্রেস নেতৃত্বকে। 


প্রদেশ কংগ্রেসের  মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেছেন,'আমরা এসেছি ত্রাণ নিয়ে। আমাদের যেতে দিন।' বারুইপুর এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেছেন, 'আপনাদের যা ত্রাণের জিনিস আছে আপনারা জয়নগরের বিডিওকে দিয়ে দেবেন উনি ডিসট্রিবিউট করে দেবেন।' মঙ্গলবার জয়নগরের দলুয়াখাকিতে বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল সিপিএমের প্রতিনিধিদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গ্রামে ঢুকতে পারেননি সুজন চক্রবর্তীরা। দলুয়াখাকিতে ঢুকতে পারেননি আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিও। 


আর শুক্রবার, দলুয়াখাকিতে ঢুকতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদেরও। সব হারানো দলুয়াখাকি যেনও 'দুর্ভেদ্য'।  সোমবার জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনের পরই,আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল সিপিএমের একাধিক কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে।সর্বহারা সিপিএমের সেই কর্মীদের জন্যই এদিন ত্রাণ নিয়ে পৌঁছন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা।


কিন্তু, গ্রামে ঢোকার আগে রামচন্দ্রপুর হাটের সামনেই আটকে দেওয়া হয় তাঁদের। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর ত্রাণ না দিয়েই ফিরে যেতে হয় কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলকে। কংগ্রেসের ব্লক সভাপতির কাছে ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে ফিরে আসেন নেতা-কর্মীরা। এই ত্রাণসামগ্রী পরে বন্টন করে দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে। 


 মৃত সইফুদ্দিন লস্কর ছিলেন তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। পাল্টা এক দুষ্কৃতীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। বাড়ির কাছেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষকৃতীরা। পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রাজনৈতিক কারণ? নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা? কী কারণে খুন খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।


আরও পড়ুন, রেশন দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে জানতেন ! বয়ানে বিস্ফোরক জ্যোতিপ্রিয়


গোটা ঘটনার পর কড়া প্রতিক্রিয়া বাম-বিজেপি-তৃণমূলের।তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের বগটুই গ্রাম। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছিল শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। ২০২২-এর ২১ মার্চ, বগটুইয়ের সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। 'যেকোনও মৃত্যু দুঃখজনক, কিন্তু অন্য কারও ঘাড়ে দোষ চাপাবার কোনও মানে হয় না', বলেছেন তিনি।   অন্তর্দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় দুষ্কৃতীদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিশানা করেছে শাসক দল, অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।