সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: ঝালদা পুরসভায় (Jhalda Municipality) নাটকীয় মোড়। তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশ অগ্রাহ্য় করে, চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনলেন ৫ বিক্ষুব্ধ শাসক কাউন্সিলর। পদে আসার ৪ মাসের মধ্য়েই অপসারিত শীলা চট্টোপাধ্যায়। বিরুদ্ধে ভোট দিলেন ২ কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলরও।
ঝালদা পুরসভায় অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে চরমে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। নির্দেশ জারি করে অনাস্থা আটকানোর চেষ্টা করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য় করে, তলবি সভায় পুরপ্রধানকে সরানোর প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা।
সামনে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভাকে নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ফের চরমে।
গত পুরভোটে ঝালদার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূল, দু'পক্ষই ৫টি করে আসনে জয়ী হয়। নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন ২টি আসনে। ৬ সেপ্টেম্বর, চেয়ারপার্সন-সহ ঝালদা পুরসভার ৩ কংগ্রেস ও ২ নির্দল কাউন্সিলরকে দলে টেনে কংগ্রেসের পুরবোর্ড ফেলে দেয় তৃণমূল। তা নিয়ে উত্তাল হয় রাজ্য-রাজনীতি। আর সেই দলবদলের ফলে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেসের কাউন্সিলর সংখ্যা কমে হয় ২। তৃণমূলের আসন সংখ্য়া ৫ থেকে বেড়ে হয় ১০।
পুরসভা দখলের পরেও টানাপোড়েন কমেনি। চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল কাউন্সিলরদেরই একাংশ। ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সনের অপসারণ চেয়ে জোড়া মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
সেই মামলায়,হাইকোর্ট (High Court) নির্দেশ দেয়, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন পদে থাকতে পারবেন শীলা চট্টোপাধ্য়ায়। মেয়াদ ফুরোতেই ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে, আস্থা ভোট করাতে নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। পরে সেই নির্দেশ খারিজ করে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পুর চেয়ারপার্সনকে সরাতে হবে পদ্ধতি মেনে। এই প্রেক্ষাপটে, ১৭ জানুয়ারি তলবি সভা ডাকে মহকুমা প্রশাসন।
কিন্তু তার আগে, মঙ্গলবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া অনাস্থা প্রস্তাব আটকাতে নির্দেশ জারি করেন। তলবি সভা আটকাতে চিঠি দেন, খোদ পুর প্রধান শীলা চট্টোপাধ্য়ায়ও। কিন্তু, দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে, বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ, করে পুর প্রধানকে সরানোর প্রস্তাব পাস করেন বিক্ষুব্ধ ৫ তৃণমূল কাউন্সিলর এবং কংগ্রেসের ২ কাউন্সিলর। ঝালদা পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর বিপ্লব কয়াল বলেন, 'পুরপ্রধান যে শীলা চ্য়াটার্জি ছিলেন আমার পুরসভার, তাঁকে আজকে ৭-০ ভোটে অপসারিত করা হল। ঝালদা পুরসভা ২ বছর হতে চলল, সমস্ত কাজ স্তব্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। ঝালদা পুরসভায় যা উন্নয়ন, সেটা আপনারা দূরবিন নিয়েও দেখতে পাবেন না। নতুন করে একটা ইটও কোথাও পাতা হয়নি। এত বোগাস চেয়ারম্য়ান আমরা আজ পর্যন্ত পুরসভায় পাইনি।'
দলের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করেই পুরপ্রধানকে অপসারণ। ঝালদায় চরমে তৃণমূলের কোন্দল।
আরও পড়ুন: ২৭ মিনিটে ৩৪ কিলোমিটার! শেওড়াফুলি-আরামবাগ শাখায় বাড়বে রেল-গতি