সন্দীপ সমাদ্দার, ঝালদা: ঝালদায় (Jhalda) কংগ্রেস কাউন্সিলরকে (Congress Councilor) গুলি করে খুনের ঘটনায় মৃতের দাদাকে আটক করেছে পুলিশ। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর ভাইপো দীপক কান্দু এবার তৃণমূলের টিকিটে ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাকার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পরাজিত হন। তৃণমূল প্রার্থীর বাবাকে আটক করেছে ঝালদা থানার পুলিশ। ফলে রাজনৈতিক কারণ নাকি, পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুরুলিয়ার ঝালদায় ত্রিশঙ্কু পুরবোর্ড কারা গঠন করবে তা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই খুন হয়ে গেলেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর। ৪ বারের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার পুরুলিয়া বনধ ডেকেছে জেলা কংগ্রেস। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। খুনোখুনির সঙ্গে যোগ নেই দলের, পাল্টা দাবি করল তৃণমূল।
সম্প্রতি, পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা ভোটে ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হন তপন কান্দু। তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু কংগ্রেসের হয়ে জেতেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার পুরুলিয়া শহরে দলের বৈঠক সেরে ঝালদায় ফেরেন তপন কান্দু। বিকেলে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছিলেন তিনি। অভিযোগ, তখনই বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মাথায় গুলি লাগে কংগ্রেস কাউন্সিলরের। রাঁচির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, “কোর্ট মনিটর্ডড সিবিআই তদন্ত চাইছি।’’
এবারের ঝালদা পুরসভার ভোটে ১২ ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টি করে ওয়ার্ডে জেতে কংগ্রেস ও তৃণমূল ২ আসন পায় নির্দল। ত্রিশঙ্কু ঝালদা পুরসভায় বোর্ড গঠন করতে ন্যূনতম ৭ কাউন্সিলরের সমর্থন প্রয়োজন। এক নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থন পেলেও বোর্ড গঠনের অবস্থায় ছিল না তৃণমূল। সেখানে তপন কান্দুর মৃত্যু হওয়ায়, কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সংখ্যা কমে দাঁড়াল ৪। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “ঝালদাতে কংগ্রেসের বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে যাবে বলে, বানচাল করে দেওয়ার জন্য তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তপন কান্দুকে হত্যা করল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জিতেছেন, তবু কোথাও বিরোধীরা কোথাও সম্ভাবনা তৈরি হলে, এই ভাবে খুন করবেন।‘’
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, ট্যুইট করে লেখেন, “ঝালদা পুরসভার নবনির্বাচিত ও চারবারের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে, মোটরবাইকে এসে গুলি করেছে দুষ্কৃতীরা। সন্দেহ করা হচ্ছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত কংগ্রেস কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। তৃণমূলের সীমাহীন ক্ষমতার লোভে একজন নিরীহ মানুষের প্রাণ গেল।‘’