অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: সাতসকালে বিনপুরের লালগড়ের (Lalgarh) রাস্তার উপর দাঁপিয়ে বেড়ালো দলমা থেকে আগত দলছুট দাঁতাল (Elephant)। শুক্রবার সকালে খাবারের সন্ধানে দলছুট দাঁতালটি জঙ্গল ছেড়ে লালগড় গ্ৰামের রাস্তার উপর তাণ্ডব চালায়। ফলে রাস্তায় তৈরি হয় যানজট। সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণত মানুষ থেকে শুরু করে যানবাহন চালকদের।
জানা গিয়েছে, লালগড় গ্ৰামে তান্ডব চালালোর সময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে দাঁতাল হাতিটি। বাড়ির সামনে দাঁতাল হাতি দেখে আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে সাধারণ মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এদিন দাঁতাল হাতিটি খাবারের সন্ধানে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ের রাস্তার উপর দাঁপিয়ে বেড়ায়। বেশ কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে দলছুট দাঁতালটি।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বনদপ্তরের কর্মীরা। শেষমেশ স্থানীয় বাসিন্দা ও বনদপ্তরের কর্মীদের প্রচেষ্ঠায় দাঁতালটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। প্রতিনিয়ত যেভাবে খাবারের সন্ধানে দলমার দাঁতালের দল জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এলাকার বাসিন্দারা।ফলে সাধারণ মানুষের দিনের পর দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বনদপ্তরের বিরুদ্ধে।কবে হবে হাতির সমস্যার সমাধান তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন।
তবে মাঝে মধ্যেই এই ধরনের তাণ্ডবের মুখোমুখি হতে হয় এই এলাকাবাসীদের। জুলাইয়ের শুরুতেই ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় পিপড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালায় দাঁতালের দল। খাবারের সন্ধানে ঢুকে ১৩টি হাতির দল বড়পিপড়ি গ্রামের বাসিন্দা গুনা মাহাতোর বাড়ি ভেঙে দেয়। স্থানীয়রা হাতিগুলিকে তাড়া করলে সেগুলি পুকুরিয়া বিটের পাঁচামি গ্রামের দিকে চলে যায়। কিন্তু সেখানেও তাণ্ডব। অভিযোগ, পাঁচামি গ্রামের রাজু মুর্মুর বাড়ি ভেঙে দেয় তারা। সেখান থেকে স্থানীয়দের তাড়া খেয়ে পুকুরিয়া বিটের মাসাংডিহির জঙ্গলের দিকে চলে যায় হাতির দল। কিন্তু আতঙ্ক কমেনি। ওই এলাকার বাসিন্দাদের কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হয়। নয়াগ্রাম, বিনপুর, জামবনি, লালগড় থানা এলাকাতেও হাতির দল বেপরোয়া ভাবে তাণ্ডব শুরু করেছে বলে খবর। সব মিলিয়ে বেশ আতঙ্কের ছবি। সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন দফতরের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন, 'উনি একা পাপের সঙ্গে যুক্ত নন', পার্থ-র কাছে বাকিদের নাম জানতে চাইলেন দিলীপ
জুনমাসেও হাতির হামলায় ঝাড়গ্রামে বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছেন এক মহিলা। হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে পাকিয়ে তুলে ধরে আছাড় মারে বলে জানা যায়। সেখানে এমএসকে স্কুলের সামনে হাতির মুখে পড়ে যান মিনি খিলাড়ি নামের ওই মহিলা। তখনই মর্মান্তিক পরিণতি। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে কোও রকমে তাঁকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি।