অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: নয় নয় করে ৪০০ বছর বয়স পুজোর। দূর-দূরান্ত থেকে ভিড় করেন ভক্তজনেরা। কিন্তু মাতৃপ্রতিমা বলে কিছু নেই ঝাড়গ্রামের সাবিত্রী মন্দিরের পুজোয়। মূর্তিপুজো পুরোপুরি নিষিদ্ধ সেখানে। বরং পটের পুজোই হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। সাবিত্রী মন্দিরের পুজো শত্রু নিধনেরও প্রতীকী (Durga Puja 2022)।


৪০০ বছর পুরনো ঝাড়গ্রামের সাবিত্রী মন্দিরের পুজো


ঝাড়গ্রামের (Jhargram News) প্রচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম সাবিত্রী মন্দিরের পুজো। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে এই পুজোর সূচনা। এই পুজো নিয়ে অনেক লোককথা আছে। সময়ের প্রলেপে ইদানীং দুর্গাপুজোর অধুনিকীকরণ হলেও, ঝাড়গ্রামের সাবিত্রী মন্দিরের পুজো আজও থমকে রয়েছে অতীতে। 


শোনা যায়, আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে, তৎকালীন এক রাজা যুদ্ধ জয় করে ফিরছিলেন। এখন যেখানে মন্দির, সেই সময় জঙ্গল ছিল সেখানে। বাড়ি ফেরার পথে আচমকা ওই জঙ্গলে এক সুন্দরী রমণীকে দেখতে পান রাজা। একাকী রমণীকে দেখে এগিয়ে যান রাজা। 


আরও পড়ুন: Durga Puja 2022 : অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে চামুণ্ডা রূপে পূজিত হন দেবীদুর্গা, কী মাহাত্ম্য সন্ধিপুজোর ?


কিন্তু রাজা যত এগোতে থাকেন, ততই মাটিতে প্রবেশ করতে থাকেন ওই সুন্দরী রমণী। তাতে ছুটে গিয়ে ওই রমণীর কেশরাশি টেনে ধরেন রাজা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।  রাজার হাতেই রয়ে যায় ওই রমণীর একগোছা কেশ। তা হাতে নিয়েই বাড়ি ফিরে আসেন রাজা। 


কিন্তু ওই রাতেই স্বপ্নে দেবীর দেখা পান রাজা। স্বপ্নাদেশ পান, জঙ্গলে পাথরের উপর ওই কেশরাশি রেখে পুজো করার। সেই থেকেই সাবিত্রীর পুজো শুরু ঝাড়গ্রামে। পরবর্তী কালে গড়ে ওঠে মন্দির। দুর্গাপুজোর জিতাঅষ্টমী থেকে চণ্ডীপাঠ এবং যজ্ঞ শুরু হয়। বলিরও প্রচলন রয়েছে সেখানে। 


লোককথার সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেল, সাবিত্রী মন্দিরের পুজোয় ছুটে আসেন বহু মানুষ


তবে ওই মন্দিরে মূর্তিপুজো একেবারে নিষিদ্ধ। বরং পটের পুজো হয় সেখানে। ঝাড়গ্রামে পটের পুজো এই একটিই। যেহেতু রাজ পরিবারের পুজো, তাই পুজো শেষ হয় পাটাবিদা অর্থাৎ প্রতীকী শত্রু নিধনের মাধ্যমে। অস্ত্রপুজোর মধ্য দিয়ে রপুজোর সমাপ্তি ঘটে। দূর-দূরান্ত থেকে সেখানে ছুটে আসেন ভক্তজনেরা। ঐতিহ্য়বাহী এই পুজো নিয়ে গর্বিত স্থানীয় লোকজন।