প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : সোমবার ED-র হাতে গ্রেফতার হলেন মুর্শিদাবাদের জীবনকৃষ্ণ সাহা। পালানোর চেষ্টা করেও, ধরা পড়ে যান বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। আগেরবার পুকুরে ফেলেছিলেন, আর এবার মোবাইল ফোন নর্দমায় ফেলেও শেষ রক্ষা হল না। তাঁর বাড়ির পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ি, এমনকী বীরভূমে বিধায়কের পিসির বাড়িতেও সেদিন তল্লাশি চালায় ইডি। কাউন্সিলর পিসি যদিও ভাইপোর কীর্তিকলাপ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলেই দাবি করেছিলেন। কিন্তু ইডির নজরে এবার মায়া সাহা। 'পিসি-ভাইপোর মধ্য়ে টাকা-পয়সার গন্ডগো, এদের গ্রেফতার করা উচিত' এই আবহে আবার চাঞ্চল্য়কর দাবি করেছেন ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা।
কাল, বৃহস্পতিবার মায়া সাহাকে সিজিওতে তলব করল ইডি। সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মায়া সাহা। গত ২৫ তারিখ জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি মায়া সাহার বাড়িতে হানা দেয় ED। সেখানে কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। সেদিন, তল্লাশির সময় তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতে ঢুকতে যান সাঁইথিয়া থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর দীনেশ মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকে প্রথমে বাধা দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপর পুলিশ কর্মীর বডি ক্যাম খুলিয়ে তাঁকে তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়। মায়ার দাবি, ইডি কিছুই পায়নি তল্লাশিতে। সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ED-র আধিকারিকরা। ভাইপোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে কিছু জানেন না দাবি করেছিলেন কাউন্সিলর। কিন্তু জীবনকৃষ্ণর বাবা কিন্তু মায়া সাহা ও জীবনকৃষ্ণ, উভয়ের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছিলেন। ২৮ অগাস্ট, কলকাতায় তলব করা হয়েছে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি, সাঁইথিয়ার তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহাকে।
এদিকে, ৬ দিনের ইডি হেফাজতে রয়েছেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জামিনের আবেদন করেননি জীবনকৃষ্ণ সাহার আইনজীবীরা। গ্রেফতারির আগে পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্ত, আদালতে জানায় ইডি । চাকরি বিক্রির জন্য কাদের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, তার উল্লেখ রয়েছে ED-র নথিতে, খবর সূত্রের। সেই সঙ্গে জানানো হয়, ২টি মোবাইল ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কথাও। ইডির দাবি, 'আমরা যাই জিজ্ঞাসা করেছি, সদুত্তর দিতে পারেননি, নথি দেখাতে পারেননি'। পাল্টা এজেন্সি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বলে দাবি করেন জীবনকৃষ্ণের আইনজীবী। তিনি সওয়াল করেন, 'এই মামলায় অনেকেই আগে জামিন পেয়েছেন। তিনি তো তদন্তে সহযোগিতা করছেন, একাধিকবার এজেন্সির অফিসে হাজিরা দিয়েছেন। তাই তাঁকে সম্পূর্ণ রিলিজ করে দেওয়া হোক' ।