কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : দীর্ঘ ৬ বছরের অপেক্ষার অবসান। শেষমেশ এল সাফল্যের সেই কাঙ্খিত দিন। দিনের পর দিন রাস্তা, আদালত, কমিশনের দরজায় ঘোরার পর শেষমেশ নিয়োগের সুপারিশপত্র হাতে পেয়ে কেঁদে ফেললেন চাকরিপ্রার্থীরা। ন্যায্য চাকরি পেয়ে একদিকে যেমন আবেগে ভাসলেন তাঁরা। তেমনই চোখের জল বাঁধ হারাল সহযোদ্ধারা এখনও সবাই প্রত্যাশিত নিয়োগ না পাওয়ায়।


অযোগ্যদের চাকরি এবার যোগ্যদের


৬৬৩ দিন আন্দোলনের পর অবশেষে স্বস্তি মিলেছে। নবম দশম শ্রেণির শিক্ষক পদে যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের সরিয়ে যোগ্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করল স্কুল সার্ভিস কমিশন। স্কুল বেছে নেওয়ার জন্য ৬৫ জনকে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছিল এদিন। এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীও রয়েছেন। ওয়েটিং লিস্ট থেকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে খবর স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে (School Service Commission)।


প্রসঙ্গত, বেআইনিভাবে ১৮৩ জন চাকরি পেয়েছেন বলে হাইকোর্টের নির্দেশের পর তাঁদের তালিকা প্রকাশ করেছিল কমিশন। যেখানে পরে জানা যায়, ১০২ জন চাকরিতে যোগই দেননি। তাই নবম দশমের শিক্ষক পদে নিয়োগের ওয়েটিং লিস্টে থাকা ৩ হাজার জনের মধ্যে নম্বরের ভিত্তিতে ডেকে দেওয়া হচ্ছে নিয়োগের সুপারিশপত্র। 


চোখে জল 


নিয়োগের সুপারিশপত্র হাতে পেয়ে আবেগপ্রবণ আন্দোলনকারীরা। চোখের জলে ভেসে তাঁরা বলেছেন, 'দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের শেষে জয় এসেছে, ভাল লাগছে। অনেক আগেই পেতে পারতাম, কিন্তু যাক শেষপর্যন্ত আন্দোলনে সাফল্য পেয়ে ভাল লাগছে। সহযোদ্ধারা চাকরি পেলে আরও ভাল লাগত। ওঁরা চাকরি না পাওয়ায় খারাপ লাগাটা রয়ে গিয়েছে। আমরা তো আন্দোলনের জেরে চাকরি পেলাম, কিন্তু আমাদের অনেক সহযোদ্ধাই তো ন্যায্য চাকরির দাবি নিয়ে এখনও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে। ওঁরাও চাকরিটা পেলে সত্যিই ভাল লাগত।'


সহযোদ্ধারা চাকরি পেলেও আন্দোলনের অন্যতম মুখ ইলিয়াস বিশ্বাস নিজে এখনও চাকরি পাননি। তিনি বরাবরই পাশে থেকেছেন বলে জানালেন আন্দোলনকারীরা। নিজে চাকরি না পেলেও হাসিমুখে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে আইনি ও পথের লড়াই করতে হয়েছে আমাদের। এর মাঝে প্রাথমিক সাফল্য এসেছে। আশা রাখি আন্দোলনে যাঁরা যুক্ত তাঁরা সবাই চাকরি পাবে। আশা রাখি সবাই ন্যায্য চাকরি পাবে। আর সরকার আমাদের ঠিকঠাকভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা করবে। 


আরও পড়ুন- অযোগ্যদের সরিয়ে যোগ্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করল SSC