কলকাতা: টাকা দিলেই ওএমআরের নম্বর বদলে চাকরির ব্যবস্থা! এবার নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার নাইসার ভাইস প্রেসিডেন্ট। এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিলেন নীলাদ্রি। 


কী অভিযোগ:
সুবীরেশ ভট্টাচার্যর হাত ধরে নিয়োগ দুর্নীতিতে হাতেখড়ি নীলাদ্রির, সিবিআই সূত্রে দাবি। নাইসার কাছে নয়, কোটি টাকার ওপরে গিয়েছিল নীলাদ্রির অ্যাকাউন্টে, দাবি সিবিআই সূত্রে। ওএমআর বিকৃতির জন্য আলাদা একটা টিম করেছিল নাইসার ভাইস প্রেসিডেন্ট, দাবি সিবিআইয়ের একটি সূত্রের। তাদের আরও দাবি, টাকা দিলেই ওএমআরে নম্বর বদলে দিত নীলাদ্রির টিম।


এই প্রথম নয়, আগেও গ্রেফতার হয়েছিলেন নীলাদ্রি দাস। ২০১৯-এর ৭ মার্চ সিআইডির হাতে গ্রেফতার হন নীলাদ্রি দাস।  পটাশপুরে প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলায় সিআইডির হাতে গ্রেফতার হন তিনি। সিআইডির হাতে গ্রেফতারের কয়েকদিনের মধ্যেই হাইকোর্ট থেকে জামিন পান  নীলাদ্রি। ২০০২ সাল পর্যন্ত বরানগরের বাসিন্দা ছিলেন নীলাদ্রি। পরে পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে থাকেন দিল্লিতে। সেই নীলাদ্রি দাস এবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার। 


সিবিআইয়ের দাবি কী?
নীলাদ্রির গ্রেফতারির পর চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআইয়ের। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশে ৮ হাজার ১৬৩ ওএমআর বিকৃতি করা হয়েছে। গ্রুপ সি-তে ৩ হাজার ৪৮১ ওএমআর শিটে বিকৃতি হয়েছে। গ্রুপ ডি-তে ২ হাজার ৮২৩ ওএমআর শিটে বিকৃতি। নবম-দশমে ৯৫২ ওএমআর শিটে বিকৃতি, একাদশ-দ্বাদশে ৯০৭ ওএমআর শিটে বিকৃতি হয়েছে বলে দাবি সিবিআই সূত্রে। 


সিবিআই সূত্রে দাবি, ২০১৫ থেকে ওএমআর শিট বিকৃতির কারবারে জড়িত নীলাদ্রি। সুবীরেশ ভট্টাচার্যর হাত ধরে নিয়োগ দুর্নীতিতে হাতেখড়ি, সিবিআই সূত্রে দাবি। নাইসার কাছে নয়, নীলাদ্রির অ্যাকাউন্টের গিয়েছিল কোটি টাকার ওপর। নীলাদ্রি আলাদা একটা টিম করেছিল ওএমআর বিকৃতির জন্য। যাঁরা টাকা দিতেন, তাঁদের নাম চলে যেত নীলাদ্রির কাছে। তারপরেই শূন্য পেলেও ওএমআর-এ সেই নম্বর হয়ে যেতে ৫০-এরও উপরে। 


গতবছর দিল্লি ও গাজিয়াবাদে নাইসার অফিসে হানা দেয় সিবিআই। তারপর থেকেই তদন্তকারী সংস্থার ব়্যাডারে নীলাদ্রি। সিবিআই সূত্রে দাবি, সুবীরেশের সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় নীলাদ্রির। ২০১৪ থেকে ২০১৮ এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন সুবীরেশ। তারপর ঘনিষ্ঠতা এসপি সিন্হার সঙ্গে। এসপি সিনহার মাধ্যমে শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ। ১ কোটি টাকার বেশি আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে সূত্রের খবর। নীলাদ্রি কার নির্দেশে কাজ করতেন সেটাও দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।


যোগ্যদের বঞ্চিত করে, টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের স্কুলে চাকরি পাইয়ে দিতে, যে কীভাবে OMR-এ কারচুপি করা হয়েছে, তা বাগ কমিটির রিপোর্টেই জোরালভাবে তুলে ধরা হয়েছিল। ওই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছিল। OMR শিট মূল্যায়নের জন্য NYSA কমিউনিকেশন প্রাইভেট লিমিটেডকে বরাত দিয়েছিল SSC। পরে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করে, এনডি ইনফোসিস্টেম সংস্থাকে আনা হয়। নিয়ম অনুযায়ী অন্য সংস্থাকে বরাত দিতে হলে, বোর্ড মিটিং করতে হয়। কিন্তু, SSC'র তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার বয়ান থেকে জানা যায়, সংস্থা বদলের জন্য কোনও বোর্ড মিটিং হয়নি। নীলাদ্রিকে গ্রেফতারের পর আবার সামনে চলে এসেছে এস পি সিন্হার নাম


আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনের মধ্যেই ১০ অফিসারের বদলি