কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজ। ফের শিক্ষাঙ্গনে শাসক-সংগঠনের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে নৈরাজ্য কায়েমের অভিযোগ উঠল এবার। তার জেরে স্বেচ্ছাবসর চাইলেন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের (Jogesh Chandra Chaudhuri College) অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। আতঙ্কে কলেজে না গিয়ে তিনি বাড়িতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। (Kolkata News)


এবিপি আনন্দের সামনে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন পঙ্কজ। তিনি বলেন, "স্বেচ্ছাবসরের চিঠি টিআইসি-কে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাকে যেভাবে মানসিক নির্যাতন করছে, সহ্য করতে পারছি না আর। তাই স্বেচ্ছাবসর চাইতে বাধ্য হচ্ছি। শাসকদলের ছাত্র সংসদ, তারা বলে, তারা নাকি পদাধিকারী। জানি না আমি। আমার কলেজে দিনের পর দিন ভর্তির নামে তালিকা দেওয়া হচ্ছিল। আমি সেটা গ্রহণ করিনি। গ্রহণ না করলে, কী করতে হয়, সেই মুন্সিয়ানা অর্জন করে ফেলেছে ওরা।"


তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দেওয়া ভর্তির তালিকা গ্রহণ করেননি বলেই হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন পঙ্কজ। তাঁর কথায়, "শেষ পর্যন্ত ওই তালিকা নেওয়া হয়নি। মেধাতালিকা অনুযায়ীই সব হয়েছে। পাস-ফেল নিয়ে এর আগে জলের পাউচ ছুড়েও মারা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ, হয় ইউনিয়ন করুন, নইলে ইউনিয়নের কাজ বন্ধ করুন। হয় মনোনয়ন রাখুন, নয় বন্ধ করুন। কিন্তু যে নাটকটা করছেন, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।"


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee : 'বড় বড় চুক্তি হয়েছে' লগ্নির খোঁজে স্পেন, দুবাই সফর সেরে ফিরে বললেন মুখ্যমন্ত্রী


অধ্যক্ষের এই অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, "অভিযোগটা উনি অধ্যক্ষ হিসেবে না বিজেপি-র মুখপাত্র হিসেবে করেছেন, জানি না। অধ্যক্ষ হিসেবে বললে অবশ্যই খোঁজ নেব বিষয়টি। যদি কোনও গাফিলতি থাকে আমাদের তরফে, দেখব। অনুরোধ করব, কলেজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।"


অধ্যক্ষ যেমন তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন, তেমনই তারাও পাল্টা অভিযোগ করেছে। তৃণাঙ্কুর বলেন, "বাস্তবটা হল, অধ্যক্ষ এবং বিজেপি-র মুখপাত্রের জায়গাটা গুলিয়ে ফেলছেন উনি। উনি চাইছেন,  তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবরকম ভাবে কালিমালিপ্ত করতে। টিভির পর্দায় বিভিন্ন ভাবে কাদা ছুড়তে দেখি ওঁকে। বিজেপি-র তরফ থেকে হয়ত থেকে কোনও অফার পেয়েছেন যে বিধানসভা বা লোকসভার টিকিট পাবেন। আসলে উনি কলেজ আসেন না। সময় দেন না কলেজকে। প্রচুর অভিযোগ রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। জল নিয়ে, বাথরুম নিয়ে সমস্যা রয়েছে। সেগুলির সুরাহা করতে পারছেন না। তাই বিজেপি-র অফার ভাল বলে মনে হচ্ছে। তবু আমার অনুরোধ, উনি পালিয়ে না গিয়ে, সমস্যাগুলির সমাধান করুন।"