কলকাতা: যাদবপুরে পড়ুয়া মৃত্যুর ইতিমধ্যেই কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস। একের পর এক অভিযোগ ওঠার পর উঠে এসেছিল সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রসঙ্গ। কিন্তু বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। বাধ সেধেছিল মত পার্থক্য। তবে বিস্তর তর্ক-বিতর্কের পর অবশেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) এল সিসি ক্যামেরা। 


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২৯ টি সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আপাতত শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটেই বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। এর মধ্যে আছে ৬টি অত্যাধুনিক এএনপিআর ক্যামেরাও। এএনপিআর ক্যামেরায় যে কোনও গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকলে তার নম্বর প্লেটের ছবি উঠবে। এছাড়া ২১টি  হাইএন্ড বুলেট ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে। সিসিটিভি মনিটরিং-এর  জন্য তৈরি হয়েছে সার্ভার রুমও।


ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে তদন্তে সামিল হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটি।  গত এক মাসে এতকিছুর পরেও কয়েক বিষয়ে ওঠে বিতর্কের ঝড়। ফের সামনে আসে সেই নিরাপত্তার বিষয়টিই। একাধিকবার সামনে আসে যাদবপুর ক্যাম্পাসে ঢিলেঢালা নিরাপত্তা ও নজরদারির অভাবের ছবিটাই।সম্প্রতি ক্যাম্পাসে দেখা যায়, ২০-২২ পুরুষ ও মহিলা সেনার আদলে পোশাক পরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় অরবিন্দ ভবনের সামনে। তারা কারা সেই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কীভাবেই বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারলেন? কেন গেটে আটকাল হল না? পরে জানা যায়, এরা সকলেই এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটি নামে এক বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি।


সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে তাঁরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এবার সেনার পোশাক পরে ক্যাম্পাসে ঢোকা বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে নোটিস দিল পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও বেশকিছু নথি। পাশাপাশি তলব করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টসকে। যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ে বারবার বিতর্ক উঁকি দিয়েছে।


আরও পড়ুন, বেহাল রাস্তায় ভোগান্তি চরমে, ধানের চারা পুঁতে অভিনব প্রতিবাদ SUC।-র


সম্প্রতি সিসিসিটিভি ক্যামেরা হাতে যাদবপুরে পৌঁছে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে নজরদারির স্বার্থে তা লাগানোর পক্ষেই সওয়াল করেছিল টিএমসিপি। একদিকে যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি লাগানোর দাবিতে সরব তখন উল্টোদিকে স্বরূপনগরে বিরোধিতা চালিয়েছিল টিএমসিপি। যে ঘটনার জেরে তৈরি হয়েছিল উত্তেজনা। সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল স্বরূপনগরের শহিদ নুরুল ইসলাম কলেজ। যার জেরে অধ্যক্ষের ঘরে তাণ্ডব চলে। ভাঙচুর করা হয় আসবাব, সিসিটিভি। পড়ুয়াদের দাবি 'অন্যায়ভাবে ছাত্রীদের কমন রুম, টিচার্সদের কমনরুমে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। অধ্যাপিকা ও ছাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য নষ্ট হচ্ছে'।