কলকাতা: অকালে ঝরে তরতাজা প্রাণ। কিন্তু কেন এমনটা হল? ক্লাস শুরুর চার দিনের মাথায় কীভাবে মৃত্যু হল প্রথম বর্ষের ছাত্রের। পরিবারের অভিযোগ, র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন তাদের ছেলে। র্যাগিংয়ের ঘটনা সামনে যাতে চলে না আসে তাই প্রাণ দিতে হল স্বপ্নদীপকে।
কী জানাচ্ছে পরিবার?
বরাবরই মেধাবী ছাত্র স্বপ্নদীপ। দু'চোখে নতুন স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন পড়তে। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল স্বপ্নদীপের। ছোট ছেলেকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল বাবা। খালি হয়ে গেল আরও একজন মায়ের কোল। মৃত স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু বলেন, "ঠিক ছিল শুক্রবারে গিয়ে নিয়ে আসব। তেমনটাই কথা হয়েছিল। বলেছিল সব কিছু বলা নিষেধ। অ্যাডজাস্ট করে থাকতে হচ্ছে। ওইদিন রাতে বারবার ফোন করে দেখি ফোন কেটে দিচ্ছে। র্যাগিং চক্রের মধ্যে যারা ছিল তারাই কেটে দিয়েছে ফোন। তাদের ফোন থেকেই ফোন করে কথা বলে। ওরা শিখিয়ে দিচ্ছিল এটা বল ওটা বল। বারবার বলছিল মা ভাল নেই। অনেক কথা আছে। ওর দাদা বারবার জিজ্ঞেস করছিল ভাই ভাল আছিস তো? বোঝা যাচ্ছিল ওকে কেউ চেপে ধরে রেখেছে। এই ছেলে বেরিয়ে গেলে ফাঁস হয়ে এটা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল। যার জন্য ওকে শেষ করে দেয়। ও নিজেও বোধহয় ভাবতে পারেনি শেষ করে দেবে। মাথার চুল কেটে ছোট করে দেয়। সৌরভ সিনিয়র স্টুডেন্ট। ওই মূল পান্ডা। ওরাই মেরে ফেলেছে। আমরা যাওয়ার সময় সৌরভ আমাদের বলছে কাল সকালে আসবেন। স্বপ্নদীপ উপর থেকে পড়ে গিয়েছে। এই খুনিদের নির্মূল হোক। কেপিসির ডাক্তার জানে কত জায়গায় আঘাতের চিহ্ন। গ্রাম থেকে এত কষ্ট করে পাঠালাম। পিজি চালাতে পারব না। সৌরভ বলল আমি রেখে দেব ঠিক হস্টেলে। ওই মূল ষড়যন্ত্রী। অ্যান্টির্যাগিং ফর্ম ফিল আপ করতে হয়। সেটা দেখেই যাদবপুরে ভর্তি করি।''
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় আটক এক প্রাক্তন পড়ুয়া। পুলিশ সূত্রে দাবি, মৃত ছাত্রের বাবা যে FIR করেছেন, তাতে এই সৌরভ চৌধুরীর নাম রয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভ চৌধুরী যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০২২ সালে তিনি MSc পাস করেন।কিন্তু, পাস করে যাওয়া পরও, গত একবছর ধরে তিনি হস্টেলেই থাকতেন। পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সৌরভ চৌধুরীর বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে। এরপরই তাকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: North 24 Parganas: কে হবেন উপপ্রধান? পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে রাজারহাটে তুমুল উত্তেজনা