কলকাতা: মুখ্যসচিবের সঙ্গে নবান্নের বৈঠকে মিনিটস নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় হতাশ জুনিয়র ডাক্তাররা। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নার পাশাপাশি কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছ থেকে কোনও ইমেল না আসায়, এবার জুনিয়র ডাক্তাররাই তাঁকে ইমেল পাঠালেন। সরকারের কাছ থেকে নতুন নির্দেশিকা চেয়ে ইমেল করলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। (Junior Doctors Protest)


বৃহস্পতিবার অবস্থানের দশম দিন এবং কর্মবিরতির ৪১তম দিন। গতকাল নবান্নের বৈঠকেও মেলেনি সমাধানসূত্র। এর পর মুখ্যসচিবের কাছ থেকে আর কোনও চিঠি পাননি জুনিয়র ডাক্তাররা। তাই এদিন ফের তাঁকে ইমেল পাঠান তাঁরা। ইমেলে ১৫টি পয়েন্টের উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে এবং মেডিক্যাল কলেজগুলির জন্য একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার। গতকাল বৈঠকের আলোচ্য সূচি অনুযায়ী একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে, যা সরকারকে পাঠানো হয়েছে। সেই মর্মেই নির্দেশিকা চাইছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। (RG Kar Protests)


গতকাল নবান্ন থেকে ফিরে, রাত ২টোর পর ইমেলটি মুখ্যসচিবকে পাঠানো হয়। ইমেলে বলা হয়েছে, কলেজ স্তরের একটি তদন্ত কমিটি গড়া হবে। ওই কমিটির কাজ হবে, হুমকি-শাসনির অভিযোগ খতিয়ে দেখা। যাঁদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠবে, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা যাবে না ওই অভিযুক্তকে। বিভিন্ন কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ রয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলিতেও বিজয়ী ছাত্র সংসদ নেই। তাই অবিলম্বে ছাত্র নির্বাচনের দাবি তোলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, আবাসিক ডাক্তারদের সংগঠন তৈরি করতে হবে, কলেজগুলিতে টাস্কফোর্স থাকবে, যেখানে সকলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। সমস্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি করবে তারা। পুলিশকর্মীর সংখ্যা হাসপাতালে থাকবেন, মহিলা পুলিশ কতজন থাকবেন, তাও নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। চালু করতে বলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইনও। পাশাপাশি, প্যানিক কলের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে, যাতে সঙ্গে সঙ্গে বিপদবার্তা নিকটবর্তী থানায় পৌঁছে যায়।


রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা যখন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে, সেই সময় ডাক্তারদের এগিয়ে আসতে আজ আহ্বান জানান মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি চিকিৎসকদেরও বলব, সাপেরা ডাঙায় আশ্রয় নিয়েছে। এই জল নেমে গেলে সাপের কামড়, ডায়রিয়া, জ্বর হবেই। মুখ্যসচিবকে ফোন করে মেডিক্যাল শিবির করতে বলেছি। শিবির যে করব, এখনও কাজে যোগদান হয়নি। আমি আমার সাধ্যমতো করেছি! আশাকরি সুমতি ফিরবে। মানুষ বন্য়ায় আক্রান্ত। মানুষের প্রাণ বাঁচানো, খাদ্য তুলে দেওয়াই এখন বড় কাজ। এটা রাজনীতির সময় নয়।"


এমন পরিস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়েছেন, "গোটা পশ্চিমবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দুর্গত এলাকার সংখ্যা বাড়ছে, হাজার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতি। এখানে সকলে যা দিয়েছেন আমাদের, তা জমে রয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণশিবির গড়তে চাই আমরা। বন্যা দুর্গত এলাকায় অভয়া ক্লিনিত গড়তে চাই। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করব।ো"