কলকাতা: 'যে কেউ মামলা করতে পারে, আমাকে চাঁদ পেড়ে দাও এটাও বলতে পারে। সে রকম অপরাধ করলে বিচারপতিদের নামে মামলা হতেই পারে'। অভিষেক প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে লাগাম চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেন বিচারপতি। বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ টেনে অভিষেকের মামলার জবাবে এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'যে কেউ মামলা করতে পারে,আমাকে চাঁদ  পেড়ে দাও এটাও বলতে পারে। সে রকম অপরাধ করলে বিচারপতিদের নামে মামলা হতেই পারে। সুপ্রিম কোর্ট চাইলে গ্রহণ করতে পারে, বহু মানুষকে টেনে নামানোর চেষ্টা হয়েছে'। 


তাঁর কথায়, 'সমাজে আলোও আছে, আঁধারও আছে। আমার কাজ, কথায় একটা শ্রেণি বিপদে পড়ছে, সেজন্যেই হয়তো...'। পাশাপাশি, এদিন এজেন্সি প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগও খারিজ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, 'একটা কথাতেই এজেন্সি প্রভাবিত হবে, এসব আষাঢ়ে গল্প। সময় পাল্টাচ্ছে, আগে এত চাকরি চুরি দেখেছেন? টাকা নিয়ে চাকরি হচ্ছে। আবার চাকরি চুরির বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর উঠছে, এটা হলেও হবে'। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা প্রসঙ্গে এমনই পাল্টা জবাব দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।


কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের (Calcutta High Court) মন্তব্য নিয়ে আজই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং অমৃতা সিনহার মন্তব্যের বিরোধিতা করে আবারও শীর্ষ আদালতে যান। বিরূপ মন্তব্য থেকে বিচারপতিদের বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানান শীর্ষ আদালতের কাছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সিন্হার মন্তব্যে প্রভাবিত হবে না, এমন বেঞ্চ গঠনের আর্জিও জানিয়েছেন। (Abhishek Banerjee)


সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক মোট চারটি আবেদন জানিয়েছেন, তার প্রথমটিতে বলা হয়েছে,  সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে নির্দেশ দিক যে, অভিষেক সম্পর্কে আদালতের ভিতরে বা বাইরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অমৃতা সিনহা যে মন্তব্য করছেন, তার দ্বারা যেন দুই তদন্তকারী সংস্থা, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI) যেন প্রভাবিত না হয়। দুই সংস্থা যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে। (Justice Abhijit Gangopadhyay)


দ্বিতীয় আবেদনটিতে অভিষেক জানিয়েছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করে চলেছেন। তাঁর এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্যের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন, সেই নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত। তৃতীয় আবেদনে অভিষেক জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে যে মামলাগুলি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন, সেগুলির শুনানির জন্য তৃতীয় কোনও বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হোক, যে বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সিনহার দ্বারা প্রভাবিত হবে না। (Justice Amrita Sinha)


চতুর্থ আবেদনে অভিষেক জানিয়েছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সিনহা যাতে তাঁর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন, সেই মর্মে নির্দেশ দিক কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগেও, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হন অভিষেক।