কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, হিন্দোল দে, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ( Justice Abhijit Gangopadhyay )বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ কিংবা নিজেদের কড়া সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূলের একাংশ। আর এবার সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়েরই ভূয়সী প্রশংসা করলেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী (Manoranjan Byapari)। বললেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় প্রতিবাদী মানুষের মুখ। ফিরহাদ হাকিমের একটা সাম্প্রতিক মন্তব্য় সামনে রেখে, দুর্নীতি ইস্য়ুতে দলের নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক।


 মনোরঞ্জন ব্য়াপারী বলেছেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় যেদিকে আমাদের চোখ ফিরিয়েছিলেন, সেদিকে আমরা দেখিনি। উনি প্রথম চোখ ফেরালেন ওদিকে। তারপর আজকে ফিরহাদ হাকিম নিজে স্বীকার করছেন, কিছু দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের নিজের দলের মধ্য়ে যারা অন্য়ায়কারী, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দল কেন ব্য়বস্থা নিচ্ছে না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় তো আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। রুনা খাতুনের ব্য়াপার নিয়ে মুখ খোলার সাহস মানুষের কেন হচ্ছে? 


পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,দল একটা খুব বড় লড়াইয়ে নামছে । সুতরাং আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই লড়াইটা লড়তে হবে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যাএর অনেক লড়াইয়ে আজকে এই জায়গায় এসেছি। সুতরাং আরও বড় লড়াইয়ে আমাদের যেতে হবে।  সেটা আমরা নষ্ট করব না।  আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে থাকব।তৃণমূল বিধায়ক যে রুনা খাতুনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, তিনি যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক , হুগলি জেলা পরিষদের তৃণমূলের সদস্য়। সেই সঙ্গে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁর স্বামী হুগলির খামারগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান। 


তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন এই যুব তৃণমূলনেত্রী। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ, চাকরি পেলেও স্কুলে তাঁর দেখা মেলে না। সোশ্য়াল মিডিয়াতেও তৃণমূল বিধায়ক লিখেছেন, কলকাতার বাবুর সহায়তায় সেখানে একটা পদ সৃষ্টি করে ১৭ সালে চাকরিতে যোগ দেয়, সে যে দীর্ঘ চার পাঁচ বছর একজন শিক্ষিকা হয়ে, একদিনও ডিউটি না করে কেমন করে মাইনে পেল সেটাও অভিজিৎ গঙ্গোপাধায়ের কাছে থেকে আমি জেনে নেব। দেখবো তাঁর কলকাতার বাবু তাঁকে কী ভাবে বাঁচায়! 


আরও পড়ুন, SSKM থেকে বের করা হল 'কালীঘাটের কাকু'কে, জোকা ESI-তে আজই কি কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ ?


তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী বলেছেন, এনিয়ে তো CBI-CID তদন্ত হওয়া উচিত। ৫ বছরের মধ্য়ে কোনওদিন সে একটা ডিউটি করতে গেল না। সরকারকে ঠকালো বেতন নিয়ে। বাচ্চাগুলোকে ঠকালো না পড়িয়ে। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় এই দুর্নীতিকারীদের কাছে ত্রাস, ত্রাসের প্রতীক। রুনা খাতুন বলেছেন, যান, কেন যাননি এখনও এতদিন? যান। আপনার যদি অর্থের অসুবিধা হয়, আপনি চাইলে, আমি আপনাকে দেব। আপনি যান। আপনার যাওয়া দরকার। কারণ আপনি নিয়ম নীতি কিছুই জানেন না। সংঘাত ও দ্বন্দ্বের মাঝে বিধায়কের এই নতুন বিস্ফোরণ, আরও অস্বস্তিতে ফেলল ঘাসফুল শিবিরকে।