কলকাতা: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ (Teacher Recruitment) নিয়ে দুর্নীতির চাদর একের পর এক সরিয়ে ফেলার কাজ চলছেই। এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay) বলেছিলেন, 'যারা দুর্নীতি করেছে, ধরা পড়লেই চাকরি যাবে। যারা অসৎভাবে চাকরি পেয়েছে, সবার চাকরি যাবে। তারা কেউ যেন নিশ্চিন্তে না থাকে। তদন্তের সময় বেঁধে দেওয়ার কারণ, রাজনীতিবিদরা অত্যন্ত কৌশলী। সময় বেঁধে না দিলে তারা বেরিয়ে যাবেন।' এদিন সেই সুর রেখেই সাড়ে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এও বলেন, 'ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব। তবে যেদিন ২০১৬-র পুরো প্যানেল বাতিল করব, সেদিন ঢাকি সমেত বিসর্জনের মানে বলব’। 


এই ঢাকি নিয়েই এখন জোরাল প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য-রাজনীতিতে। ঢাকি বলতে আসলে কাকে বা কী বিষয় বোঝাতে চাইছেন মাননীয় বিচারপতি? যদিও তিনি জানিয়েছেন যে আগামী দিনে প্যানেল বাতিল করে সে প্রশ্ন জবাব তিনি দিতে পারেন। কিন্তু নয়া এই শব্দচয়ন নিয়ে নানা মহলে নানা জল্পনা চলছে। ২০১৬-র নিয়োগপ্রক্রিয়ায় চাকরির আবেদন জানিয়ে মামলা করেন ১৪০ জন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী। এদিন সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি এও বলেন, ‘মানিক ভট্টাচার্য পর্যন্ত পৌছনোর ক্ষমতা নেই বলে, চাকরি পায়নি মামলাকারীরা’। পাশাপাশি মামলাকারীদের আরও বেশ কিছু নথি পেশের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে খবর।                                                                         


আরও পড়ুন, 'ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব', প্রাথমিক শিক্ষকের প্যানেল বাতিলের হুঁশিয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের


প্রসঙ্গত ২০১৪’র টেটের পর ২০১৬ সালে নিয়োগের প্রথম প্যানেল প্রকাশ করা হয়। ২০১৭ সালে প্রকাশ পায় নিয়োগের দ্বিতীয় তালিকা। সেখানে ২৬৯ জন প্রার্থীর নাম ছিল। অভিযোগ ওঠে, ফেল করে, এমনকি পরীক্ষা না দিয়েও, ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন। অভিযোগের তালিকা ছিল অনেক বড়, নম্বর বাড়ানো ও নতুন প্যানেল প্রকাশের বিষয়ে কেন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি। যদিও এর কোনও গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এরপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে।           


এর আগে এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মুড়ি-মুড়কির মতো দুর্নীতি হয়েছে। নিজেও বেকার ছিলাম, বেকারদের কষ্টটা বুঝি। একই জিনিসের যখন দুরকম ভার্সন দেখলাম, তখন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।'