রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরেও গ্রামে আসেনি পানীয় জলের লাইন। এই নিয়ে মামলা করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। মামলা করে সিপিআইএমএল কানু সান্যাল গোষ্ঠী। সেই মামলায়, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং পিএইচই-র আধিকারিকদের কার্যত সময়সীমা বেঁধে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগকারীদের বক্তব্য শোনার পর, টেন্ডারপ্রাপ্ত সংস্থাকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি বলেন, 'জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও, যদি পানীয় জল না পৌঁছয়, তাহলে কত কড়া পদক্ষেপ হবে তা আপনারা ভাবতেও পারছেন না।' ৯ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে ফের এই মামলার শুনানি হবে।


হাতিঘিষা পঞ্চায়েত, গ্রামের নাম সবদল্লা। শিলিগুড়ি শহর থেকে নকশালবাড়ি ব্লকের এই গ্রামের দূরত্ব টেনেটুনে ৪০ কিলোমিটার। কিন্তু স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরেও এই দূরত্ব অতিক্রম করে গ্রামে আসেনি পানীয় জল। পানীয় জল নিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের। এরপরেই জল পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা হাজির হয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। আবেদন করেন পানীয় জল সংযোগের। সবদল্লা গ্রামে প্রায় ২০০০ পরিবারের বাস। বাসিন্দাদের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে আজও পানীয় জল ঢোকেনি গ্রামে। প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরিয়েও ফল মেলেনি।


এরপরেই সিপিআইএমএল কানু সান্যাল সংগঠনের রাজ্য সম্পাদিকা দীপু হালদার মামলা করেন। তা নিয়েও রাজনীতির পারদ চড়েছে। কারণ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মামলা তোলার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সবদল্লার বাসিন্দা লালমোহন মুণ্ডা বলেন, 'রাতে কিছু লোক হুমকি দেন। হাইকোর্টে গিয়ে মামলা তুলে নিতে হবে,কিন্তু গ্রামবাসীরা মামলা তুলতে নারাজ।'
 
সোমবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সে দিন গ্রামবসীদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ডেকে পাঠান বিচারপতি। সেই তলব শুনে এসেছিলেন গ্রামবাসীরা। শুনানির শুরুতে গ্রামবাসীদের বক্তব্য ভাল করে শুনতে পারছিলেন না বিচারপতি, তারপরে এজলাস থেকে নেমে এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ঘণ্টাখানেক ধরে সব অভিযোগ শোনেন তিনি। কথা বলেন, মামলাকারীর সঙ্গেও। বুধবার মহকুমা পরিষদ, পিএইচই সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের আদালতে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। 


নকশালবাড়ির বিডিও প্রণব চট্টরাজ জানিয়েছেন, তিনি সদ্য দায়িত্বে এসেছেন। বিষয়টি জানেন না। পিএইচই-র সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলবেন।


আরও পড়ুন: 'যে ওসি গাল দিয়েছেন, তাঁকে ক্ষমা চাওয়াব', উত্তপ্ত গোঘাট-তোপ শুভেন্দুর