সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: 'বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal), কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh), নীলাদ্রি ঘোষ', মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly)। সঙ্গে নির্দেশ, তাপস-কুন্তল-নীলাদ্রির বিরুদ্ধে অবিলম্বে চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, 'গত ১৮ মে তাপস-কুন্তল-নীলাদ্রির বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হলেও এখনও চার্জগঠন হয়নি।' নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, নতুন কোনও আবেদন করলে হাইকোর্টে পাঠাতে হবে। নিম্ন আদালত তার বিচার করতে পারবে না। সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, ১৪ জানুয়ারির আগেই এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানির দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা হবে। আগামী ১১ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।


তরজা চলছেই...
অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল মুখপাত্র যে চিঠি দিয়েছিলেন, তার জবাবে গত কাল কড়া বার্তা দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের। 'এবার তো চুরি করা আটকানো যাবে না বলে দুর্নীতিগ্রস্তরা মামলা করতে পারেন', বলেন তিনি। সঙ্গে সংযোজন, 'একের পর এক কোর্টে মামলা, তদন্ত ঠেকাতে কত টাকা খরচ, জানানো হোক।' আরও বললেন, 'সোশাল মিডিয়ায় সম্পত্তির হিসেব দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে মীনাক্ষীদেরও  সম্পত্তির হিসেব দেওয়ার জন্য বলব।' এতেই শেষ নয়। বিচারপতি অমৃতা সিন্হার আইনজীবী স্বামীকে সিআইডি তলব নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, 'বিচারপতির স্বামীর কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। মামলা করে থাকলে উনি তো আইনজীবী, উনি কি আসামি? যিনি আসামি, তাঁর কণ্ঠস্বরের পরীক্ষা করার চেষ্টা করা হল না।' কালীঘাটের কাকুর প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতির প্রশ্ন, 'হাসপাতাল ব্যবহার করে আটকে রাখা হল, এটা কী ধরনের রাজ্য চলছে? আমরা বুঝতে পারছি, দেখা যাক কতদিন চলে।' বিচারপতির মতে, 'আমার বিভিন্ন পদক্ষেপে ওদের বিভিন্ন স্তরের লোকেরা জেলে। তাই এত রাগ।' তাঁকে 'ভয়' দেখানোর জন্য যে অতীতে একাধিক চেষ্টা করা হয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, 'একদল চোর হয়তো একদিন বিরাট মাপের উকিলদের দাঁড় করিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে বসবে, যে আমরা চৌর্যবৃত্তি করে বাঁচি...যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় তা হলে আমাদের জীবন ও জীবিকায় অসুবিধা হয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের অবাধে চুরি করতে দেওয়ার অধিকার দেওয়া হোক, এরকম একটি পিটিশন যদি এখানে বা সুপ্রিম কোর্টে হয়, তা হলে অবাক হব না।' একই সঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের সম্পত্তি নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, 'উনি কি একটা সম্পত্তি সংক্রান্ত হলফনামা তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে পারবেন?' সাধারণ মানুষ হিসেবেই এই সম্পত্তির উৎস দেখতে চান, জানান তিনি। 


আরও পড়ুন:'৩৪ বছর মানুষের মুণ্ডু নিয়ে খেলেছে সন্ত্রাসবাদী সিপিএম, তাদের সঙ্গে আপোস নয়', ঘোষণা মমতার