সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: প্রাথমিকের দুর্নীতির বিচারে নজিরবিহীন পদক্ষেপ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly)। নজিরবিহীন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল ২০১৪ র প্রাথমিকের প্রার্থীদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট গ্রহণকারী ইন্টারভিউয়ারদের।
নজিরবিহীন পদক্ষেপ বিচারপতির: আজ একদিনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে। রুদ্ধদ্বার কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল এই ৩০ জনকে। আজকের এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে উপস্থিত ছিলেন না হাওড়ার ইন্টারভিউয়াররা। সকাল ১১:৪৫ মিনিট নাগাদ শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। এই ৩০ জনকে প্রথমে বসানো হয় হাইকোর্টের সার্ধ-শতবার্ষিকী ভবনের নবম তলের অডিটোরিয়ামে। জিজ্ঞাসাবাদ হয় অষ্টম তলের রেজিস্ট্রার লাউঞ্জে। জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর ১০ মিনিট আগে নবম তলের অডিটোরিয়ামে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, উপস্থিত ইন্টারভিউয়ারদের তিনি বলেন, "ভয়ের কোন কারণ নেই। ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন করা হবে। যে যা জানেন সত্য বলবেন, তারপর বেরিয়ে যাবেন।'' তাঁর নির্দেশ মোতাবেক তালিকা মিলিয়ে একজন একজন করে ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে পাঠানো হয়। পুলিশের সাহায্যে একজন করে ইন্টারভিউয়ারকে ডেকে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরে একে একে নীচে নেমে আদালত ছাড়েন ইন্টারভিউয়াররা।
কিন্তু কেন এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ?
২০১৪ সালে প্রাথমিক টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ইন্টারভিউ ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে বিস্তর দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন কয়েকজন প্রার্থী। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাপটিটিউড টেস্টে চক-ডাস্টার নিয়ে পড়ুয়াদের কীভাবে পড়াবেন তা দেখাতে হয় চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, সেবার আদতে কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়াই হয়নি! পুরো নম্বরটাই দেওয়া হয় পক্ষপাতিত্ব করে।
এই প্রেক্ষাপটে ইন্টারভিউয়ারদের ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেইমতো, এদিন আসা ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে প্রথমে হাইকোর্টের সার্ধ-শতবার্ষিকী ভবনের নবম তলের অডিটোরিয়ামে বসানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর মিনিট দশেক আগে, সেখানে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত ইন্টারভিউয়ারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে কিছু প্রশ্ন করা হবে।
আদালত সূত্রের খবর, ৩০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন ইন্টারভিউয়ার জানিয়েছেন, সেবার কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি। যে ১০ জন অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি, এই টেস্ট নিয়ে কোনও গাইডলাইন ছিল না। কীভাবে এই অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়েছে তাও বিস্তারিতভাবে বলতে পারেননি কেউ-ই!