সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Justice Abhijit Ganguly Removal Plea) তৃণমূল মুখপাত্রের চিঠি, জবাব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের। 'এবার তো চুরি করা আটকানো যাবে না বলে দুর্নীতিগ্রস্তরা মামলা করতে পারেন', বললেন তিনি। সঙ্গে সংযোজন, 'একের পর এক কোর্টে মামলা, তদন্ত ঠেকাতে কত টাকা খরচ, জানানো হোক।' আরও বললেন, 'সোশাল মিডিয়ায় সম্পত্তির হিসেব দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে মীনাক্ষীদেরও সম্পত্তির হিসেব দেওয়ার জন্য বলব।'
আরও যা...
এদিন বিচারপতি অমৃতা সিন্হার আইনজীবী স্বামীকে সিআইডি তলব নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, 'বিচারপতির স্বামীর কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। মামলা করে থাকলে উনি তো আইনজীবী, উনি কি আসামি? যিনি আসামি, তাঁর কণ্ঠস্বরের পরীক্ষা করার চেষ্টা করা হল না।' কালীঘাটের কাকুর প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতির প্রশ্ন, 'হাসপাতাল ব্যবহার করে আটকে রাখা হল, এটা কী ধরনের রাজ্য চলছে? আমরা বুঝতে পারছি, দেখা যাক কতদিন চলে।' বিচারপতির মতে, 'আমার বিভিন্ন পদক্ষেপে ওদের বিভিন্ন স্তরের লোকেরা জেলে। তাই এত রাগ।' তাঁকে 'ভয়' দেখানোর জন্য যে অতীতে একাধিক চেষ্টা করা হয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, 'একদল চোর হয়তো একদিন বিরাট মাপের উকিলদের দাঁড় করিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে বসবে, যে আমরা চৌর্যবৃত্তি করে বাঁচি...যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় তা হলে আমাদের জীবন ও জীবিকায় অসুবিধা হয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের অবাধে চুরি করতে দেওয়ার অধিকার দেওয়া হোক, এরকম একটি পিটিশন যদি এখানে বা সুপ্রিম কোর্টে হয়, তা হলে অবাক হব না।' একই সঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের সম্পত্তি নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, 'উনি কি একটা সম্পত্তি সংক্রান্ত হলফনামা তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে পারবেন?' সাধারণ মানুষ হিসেবেই এই সম্পত্তির উৎস দেখতে চান, জানান তিনি।
প্রেক্ষাপট...
অতীতে একাধিকবার, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানাতে শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় গত বছর, এপ্রিলে যখন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন, তখন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, 'আপনি অভিষেক ব্যানার্জিকে টার্গেট করে নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসকে টার্গেট করে নিয়েছেন এবং আপনার চেয়ারের মিসইউজ করে আপনি বাংলায় বিজেপি, সিপিএম আর কংগ্রেস - এদের হাত শক্তিশালী করছেন। যে সিপিএম অমিতাভ লালা, বাংলা ছেড়ে পালা বলেছিল, আপনি তো তাদের দলের লোক।' এটিই অবশ্য একমাত্র ঘটনা নয়। তবে এভাবে অপসারণ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি ও তার প্রেক্ষিতে বিচারপতির এই প্রতিক্রিয়া নতুন আলোড়ন তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন:রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ শঙ্কর আঢ্য