সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : গার্ডেনরিচ ( Garden Reach ) বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু ১০ জনের । এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে কারও আটকে থাকার আশঙ্কা। ভয়াবহ এই ঘটনার পরই স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বেআইনি নির্মাণের ( Garden Reach Illegal Construction ) বিরুদ্ধে। স্বয়ং মেয়রও স্বীকার করে নিয়েছেন, এই নির্মাণের আইনি ছাড়পত্র ছিল না। এই বিপর্যয়ের পর পরপর বেশ কয়েকটি বেআইনি নির্মাণ ও বিপজ্জনক নির্মাণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলি যে কোনওদিন বহু মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এবার এইসব বেআইনি নির্মাণ রুখতে কড়া বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট ( Calcutta High Court ) ।
মঙ্গলবারের পর বুধবারও বিচারপতি অমৃতা সিনহা বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কড়া পর্যবেক্ষণ ব্যক্ত করলেন। বললেন, 'বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে যুক্তদের ভাল শিক্ষা দিতে হবে। যাতে আগামীতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হয়' । বিচারপতি অমৃতা সিনহার মন্তব্য, 'আদালত চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না, বিচার না দিলে অন্যায় করা হবে। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের ওপর ডিভিশন বেঞ্চের কোনও স্থগিতাদেশ নেই। ' ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে না চাওয়ায়, অভিযুক্তের জরিমানা বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করে কলকাতা হাইকোর্ট ।
মঙ্গলবারও বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলায় কড়া অবস্থান নেয় কলকাতা হাইকোর্ট। একটা বিল্ডিং যখন ভাঙে তখন কয়েক সেকেন্ড লাগে, আর সেই বিল্ডিং ভাঙতে ৩০ দিন সময় লাগবে কেন? ইকবালপুরের একটি বেআইনি নির্মাণ মামলায় মঙ্গলবার এই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। আদালতের নির্দেশের পরও বেআইনিভাবে নির্মিত ৫ তলা একটি বাড়ি ভাঙা না হওয়ায় এদিন বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, বাইরের কলাম আর বিম ভাঙার নির্দেশ দেওয়া ছিল। বাইরের দেওয়াল ভাঙতেও এত সময় লাগবে কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। বাড়ি ভাঙার নির্দেশ কার্যকর করতে পুরসভার আপ-টু-ডেট যন্ত্রপাতি রয়েছে কিনা তাও এদিন জানতে চান বিচারপতি। উত্তরে সরকারি আইনজীবী জানান, যন্ত্রপাতির জন্য আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে সমস্যা হচ্ছে। এরপরই আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে পুর কমিশনারের থেকে ৯ এপ্রিলের মধ্যে হলফনামা তলব করেন তিনি।
অন্যদিকে, এদিন বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশের ওপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে তিনজন আইনজীবী আবেদন করেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে। এদিন তার একটিও গ্রহণ করেননি বিচারপতি। বিচারপতি সিন্হা বলেন, বাড়ি ভাঙার নির্দেশের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ নয়। বাড়ি ভাঙার নির্দেশ সংক্রান্ত কোন মামলাই শুনব না।
বুধবারও বেআইনি নির্মাণ সম্পর্কে কড়া অবস্থান নিল আদালত। এখন প্রশাসন বেআইনি নির্মাণ রুখতে আগামীতে কতটা সক্রিয় হয়, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন :