কলকাতা: মুম্বই সিটি এফসি (Mumbai City), মোহনবাগান এসজি, ওডিশা এফসি ও এফসি গোয়া লিগ শিল্ডের দৌড়ে রয়েছে। খুব একটা ভাল সময় তাদের না গেলেও কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি প্লে-অফে তাদের জায়গা পাকা করার জন্য মরিয়া। ছ’নম্বর জায়গাটার জন্যও জবরদস্ত লড়াই চলছে জামশেদপুর এফসি, পাঞ্জাব এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি, ইস্টবেঙ্গল এফসি ও চেন্নাইন এফসি-র মধ্যে।

মুম্বই সিটি এফসি (পিটার ক্রাতকি)



ক্রাতকির জমানায় মুম্বই সিটি এফসি এ পর্যন্ত যতটা এগিয়েছে, তার মধ্যে হারের সংখ্যা মাত্র দুই। ডেস বাকিংহাম দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর ক্রাতকি যে সময় দলের দায়িত্ব নেন, সেই সময় মুম্বই বাহিনী ছিল অপরাজিত। কিন্তু ক্রাতকি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটি হারে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ২-০-য় এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও হারের জন্য এই চেক-অস্ট্রেলীয় কোচকে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়। তবে তিনি দলকে ১৯ ম্যাচের পর ৩৯ পয়েন্ট এনে ক্রমতালিকার এক নম্বরে তুলে দিয়ে সমস্ত সমালোচনার জবাব দিয়ে দেন। ক্রাতকি দায়িত্ব নেওয়ার পর মুম্বই সিটি এফসি যে ১৩টি ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে সাতটিতে জিতেছে। এই ১৩ ম্যাচে ২১টি গোল করেছে তারা। তিনি আসার বাকিংহামের প্রশিক্ষণে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলে ন’টি গোল করেছিল মুম্বইয়ের দল।


মোহনবাগান এসজি (আন্তোনিও লোপেজ হাবাস)



এর আগে ২০২০-২১ মরশুমে যিনি সবুজ-মেরুন বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, সেই অভিজ্ঞ স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে ক্লাবের কর্তারা কোচের দায়িত্ব দিয়ে আনেন ২০২৩-এর শেষ তিন ম্যাচে দল পরপর হেরে যাওয়ায়। মুম্বই সিটি এফসি, এফসি গোয়া ও কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে হারের পর হুয়ান ফেরান্দোকে বিদায় জানিয়ে তাঁকে নিয়ে আসা হয় একটাই উদ্দেশ্যে, দলটার মধ্যে হারিয়ে যাওয়া লড়াকু মানসিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য।




দলের ড্রাইভারের স্টিয়ারিং হাতে নিয়ে হাবাস ঠিক সেটাই করেন। লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে নেমে যাওয়া দলটাকে এখন এমন একটা জায়গায় নিয়ে চলে এসেছেন তিনি, যে জায়গাটাকে এক নম্বর বললে বিন্দুমাত্র ভুল বলা হয় না। মুম্বই ৩৯ পয়েন্ট ও ১৭-র গোলপার্থক্য নিয়ে শীর্ষে আছে ঠিকই, কিন্তু এ সবই ১৯ ম্যাচ খেলে। মোহনবাগান এসজি-র পয়েন্টও ৩৯। কিন্তু মুম্বইয়ের চেয়ে একটি ম্যাচ কম খেলে। তাই তারা মুম্বইয়ের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বললেও বোধহয় কম বলা হবে। হাবাস দায়িত্ব নেওয়ার পর সবুজ-মেরুন বাহিনী যে আটটি ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে ছ’টি জিতেছে তারা ও দুটিতে ড্র করেছে। হাবাসের প্রশিক্ষণাধীন ম্যাচগুলিতে ১৯টি গোল করেছে তারা।


জামশেদপুর এফসি (খালিদ জামিল)



এ বারের লিগের শুরুটা একেবারেই ভাল করতে পারেনি ইস্পাতনগরীর দল। কিন্তু এখন তারা যথেষ্ট ভাল ফর্মে। স্কট কুপার জামশেদপুর এফসি-র দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর এই দলের দায়িত্ব নেন প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার খালিদ জামিল, যিনি আগেও আইএসএলে কোচিং করিয়ে সফল হয়েছেন। তাঁর সেই অভিজ্ঞতার জন্যই জামিলকে দায়িত্ব দেন জামশেদপুর এফসি-র কর্তারা। এবং তার ফলে ভাল বই খারাপ কিছু হয়নি।




কুপারের প্রশিক্ষণে দল যেখানে মাত্র দুটি জয় পেয়েছিল, হেরেছিল সাতটি ম্যাচে, সেখানে জামিলের প্রশিক্ষণে সাতটির মধ্যে তিনটি ম্যাচে জেতে তারা। যার মধ্যে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে স্মরণীয় জয়টিও অবশ্যই থাকবে। ০-২-এ পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে তারা। জামিলের আমলে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে জামশেদপুর এফসি। কুপারের সময়ে তাদের কনভারশন রেট ছিল মাত্র ৭.৮৯ %। জামিল এসে তা তুলে দেন ১১.৬৫%-এ। কুপারের সময় ১২ গোল দিয়ে ১৫ গোল খেয়েছিল ইস্পাতনগরীর দল। কিন্তু জামিল-জমানায় ১২ গোল দিয়ে ন’গোল খেয়েছে তারা। বোঝাই যাচ্ছে, ভারতীয় কোচের প্রশিক্ষণেও ঘুরে দাঁড়াতে পারে কোনও দল।                                                        -- তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল