সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : ‘পড়ুয়া না থাকলে সেই স্কুলে শিক্ষক ( School Teacher ) রেখে লাভ নেই।' বরং যে সব স্কুলে পড়ুয়া নেই সেই সমস্ত স্কুল তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ( Kolkata High Court ) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ( Justice Biswajit Basu ) । সম্প্রতি শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্যকে এমনই পরামর্শ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এবার আরেকটি মামলার প্রেক্ষিতে বিশ্বজিৎ বসু আরও বলেন ' অতিরিক্ত শিক্ষকের কী প্রয়োজন? কী লাভ ? অর্থের অপচয় হচ্ছে'
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ( School Recruitment Scam ) অযোগ্য প্রার্থীদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলাতেও কড়া হয়েছে আদালত। সোমবার এক মামলার শুনানিতে বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, 'রাজ্যে দশ হাজার শিক্ষকের প্রয়োজন বলে ঘোষণা হয়েছে, আর এদিকে চার লাখ কম ছাত্র এবার মাধ্যমিকে বসছে। এই অতিরিক্ত শিক্ষকের কী প্রয়োজন? কী লাভ ? অর্থের অপচয় হচ্ছে' মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
আরও পড়ুন : 'শরীর ভাল নেই' অনুব্রতর
তিনি আরও বলেন, 'যে স্কুলে পড়ুয়া কম রয়েছে সেখানকার ছাত্রদের কাছের অন্য স্কুলে পাঠিয়ে দিন। শিক্ষকদের অন্যত্র বদলি করুন, স্কুল শিক্ষা দফতরকে পরামর্শ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। শিক্ষামন্ত্রীকে জানান, আইনে বদল আনুন' , স্কুল শিক্ষা দফতরকে পরামর্শ বিচারপতির
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, 'সরকারি টাকায় নিজের সন্তানকে বেসরকারি স্কুলে পাঠাচ্ছেন সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। ভালো কথা। কিন্তু নিজের স্কুলের সন্তান সম পড়ুয়াদের খেয়াল রাখছেন তো ? 'কোন পড়ুয়াকে যদি জিজ্ঞাসা করা যায় যে সে আপনাদের কাছ থেকে কি শিখেছে ? সদুত্তর পাব তো ? উত্তর আপনাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে তো ? প্রশ্ন বিচারপতির
'নিজের অধিকারের এইচআরএ, সিএল, পিএল, সিসিএল চাইছেন, কিন্তু পড়ুয়াদের অধিকারের কি হবে? প্রশ্ন বিচারপতি বসুর। 'একাধিক স্কুলে ৩০, ৩৫, ৫০ জন পড়ুয়া, কিন্তু দেখা যাচ্ছে ১০-১৫ জন শিক্ষক আছেন। সরকারি কোষাগারের টাকার অপচয় হচ্ছে' , মন্তব্য বিচারপতির। 'এই সব স্কুল রেখে লাভ কি ? অন্য স্কুলের সঙ্গে মিলিয়ে দিন' স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে পরামর্শ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর।
সম্প্রতি শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত হাওড়ার একটি মামলার প্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, একটি স্কুলে ১৩ জন পড়ুয়ার জন্য ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। অন্যদিকে, ওপর একটি স্কুলে প্রায় ৫৫০ প়ড়ুয়া আছে, কিন্তু শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ৮।
নেই বাংলা ও অঙ্কের শিক্ষক। বিচারপতি এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছিলেন, ' রাজনৈতিক চাপের কথা ভুলে যান, রাজ্যের যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম তার , অনুমোদন প্রত্যাহার করুন। অচলায়তন ভাঙতে গেলে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু শুরুটা তো হোক। ' ১৭ মার্চ ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।