কলকাতা: আদালতের নির্দেশ মতো আজ ফের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে (Jyotipriya Mallick) নিয়ে যাওয়া হল আলিপুর কমান্ড হাসপাতালে। সিজিও কমপ্লেক্সের পিছনের গেট দিয়ে বার করা হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। বেরোনোর সময় জ্যোতিপ্রিয় সাংবাদিকদের জানান তিনি নির্দোষ।


'আমি নির্দোষ, মমতা সব জানেন..'


তাঁকে বিজেপি ফাঁসিয়েছে বলেও দাবি করেন জ্যোতিপ্রিয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় সব জানেন বলেও দাবি করেন জ্যোতিপ্রিয়। দুদিনের মধ্যে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে বলেও এদিন দাবি করেন জ্যোতিপ্রিয়। 'আমি নির্দোষ, আমাকে ফাঁসিয়েছে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব জানেন। দল আমার সঙ্গে আছে। দু'দিনের মধ্যে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে, দাবি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের।


'জ্যোতিপ্রিয় দোষ প্রমাণিত হলে পাশে থাকবে না দলও' 


সম্প্রতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতার হওয়া তাঁর কাছে দুঃখজনক। কিন্তু এর পাশাপাশিই তিনি স্পষ্ট করে দেন,' দোষ প্রমাণিত হলে দলও পাশে থাকবে না। পার্থ-বালু নয়, অভাববোধকে জয় করাটাই আসল সুখের চাবিকাঠি। আরও একটু ভাল থাকব, সেই ইচ্ছেপূরণ সৎ পথে না করতে পারলে সেটা অন্যায়। বই লিখি, কমিশন পাই, ভয় পাই না',মন্তব্য শোভনদেবের।


মুখ্যমন্ত্রীর সার্টিফিকেটের পরেও জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে ভিন্ন সুর কাকলির


এদিকে, মমতা পাশে থাকলেও, জ্য়োতিপ্রিয় ইস্য়ুতে ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের গলায়। জ্যোতিপ্রিয় প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,  'অবশ্য়ই তিনি সরকারের মন্ত্রী। কিন্তু, আপনারা কি জানেন, তিনি ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য় কীভাবে কাজ করেছেন? কীভাবে তাঁরা ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করেছেন? তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন, কৃষকের থেকে ধান সংরক্ষণের। এটা সবুজ বিপ্লব, মাথায় রাখবেন।' তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে দাঁড়ালেও , তৃণমূলের অন্দরে তাঁকে নিয়ে শোনা গেল ভিন্ন সুর। সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কার্যত জ্যোতিপ্রিয় সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করলেন ।  'ওটা ওঁর পার্সোনাল ক্যাপাসিটিতে উনি করেছেন। ব্যক্তি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কী করেছেন, তার জন্য দলের ভাবমূর্তি কেন নষ্ট হবে?', মন্তব্য তৃণমূল সাংসদের।


আরও পড়ুন, গলায় পেঁয়াজের মালা, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজপথে TMC


'আমাকে ফাঁসিয়েছে বিজেপি..'


তবে এতকাণ্ডের মূলে বিজেপিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন এদিন জ্যোতিপ্রিয়। গত কয়েকদিনে জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারির পর শুভেন্দু, দিলীপের তরফে একের পর এক তোপ দাগা হয়। আর সেই নিশানায় বাদ পড়েননি মমতাও।সম্প্রতি  শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'বাকিবুর রহমানের আবিষ্কার হওয়ার পরে ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে, যে এটাতে বাকিবুর রহমান একটা ইন্সট্রুমেন্ট ছিলেন। কিন্তু বাকিবুর রহমানের প্রটেকটর, মেন্টর, গাইডার ছিলেন ১১ থেকে ২১ এর খাদ্যমন্ত্রী (২০১১-২০২১), উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের অত্যন্ত আত্মার আত্মীয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি দীর্ঘ জেরার পর গ্রেফতার হওয়ার মধ্য় দিয়ে, এই দুর্নীতির কিংপিন তিনি আপাতত ইডির কাস্টডিতে গেছেন। কিন্তু আমরা মনে করি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সামনে ছিলেন। তাঁর তোলা অর্থের বড় অংশ, মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসকদলের কাছে গিয়েছে।এবং মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া, এই হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি, কখনই একজন জেলা স্তরের নেতার করা সম্ভব ছিল না।'