সমীরণ পাল, দীপক ঘোষ ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা: রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় (Ration Scam), জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) এবং বাকিবুর রহমানের (Bakibur Rahaman) গ্রেফতারির জের। অবশেষে বাকিবুরের সংস্থাকে খাদ্য় দফতরের (Food Department) পোর্টালে হোল্ড করা হল। অর্থাৎ সেখানে আর খাদ্য়শস্য় পাঠাবে না রাজ্য় সরকার। কিন্তু, বছর তিনেক আগে পুলিশ FIR করা সত্ত্বেও তদন্তে দুর্নীতির আভাস মেলেনি কেন? এই ব্য়বস্থা নিতেই বা এতদিন কেটে গেল কেন? সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ইডি-র হাতে একের পর এক গ্রেফতারি এবং চাঞ্চল্য়কর সব তথ্য় উঠে আসার পর অবশেষে নড়েচড়ে বসল রাজ্য় সরকার। খাদ্য় দফতরের পোর্টালে, এবার বাকিবুর রহমানের সংস্থা। NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেডকে হোল্ড করা হল। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায়। ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার হন ব্য়বসায়ী বাকিবুর রহমান। আর ২৭ অক্টোবর ইডি গ্রেফতার করে প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিককে। ইডি সূত্রে দাবি, এই দুর্নীতির তদন্তে নেমে, তাঁরা বাকিবুর রহমানের পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তির কথা জানতে পারেন। যার মধ্য়ে ছিল তাঁর একাধিক সংস্থাও। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, ৬টি এমন সংস্থার কথা জানা যায়, যেখানে আটা বণ্টন দুর্নীতির টাকা ঢুকেছিল। এর মধ্য়ে একটি সংস্থা ছিল NPG রাইসমিল প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থায় ১০ কোটি ৩০ লক্ষ ৯৭ হাজার ১০০ টাকা ঢুকেছিল বলে তদন্তে জানা যায়। সূত্রের খবর, জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক ও বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর খাদ্য় দফতরের পোর্টালে এই সংস্থাকে হোল্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন, হাসপাতাল থেকে ছুটি জ্যোতিপ্রিয়-র, হেঁটে বাইরে বেরোলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী
নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য় সরকারের তরফে এই চালকলগুলিতে ধান পাঠানো হয়। তারপর এই চালকলগুলি থেকে রাজ্য় সরকার ধান নেয়। সূত্রের খবর,হোল্ড করার অর্থ এই চালকলগুলিতে রাজ্য় সরকার আর ধান পাঠাবে না। বছর তিনেক আগে রেশন বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে মামলা করেছিল পুলিশও। ২০২০, ২১ ও ২২ সালে নদিয়ার ধুবুলিয়া, কোতোয়ালি ও নবদ্বীপ থানায় তিনটে FIR করে পুলিশ।২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, নদিয়ার কোতোয়ালি থানায় FIR দায়ের হয়। সেই FIR-এর ভিত্তিতেই ২০২২ সালে ED ECIR দায়ের করে। কিন্তু, পুলিশের তদন্তে এই দুর্নীতি সামনে আসেনি কেন? এনিয়ে নড়েচড়ে বসতে এতদিন লাগল কেন? এখন ইডি জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর এই ব্য়বস্থা কি মুখ বাঁচাতে? সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।আগামীদিনে জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানকে কি মুখোমুখি জেরা করবে ইডি? এই মামলায় আরও কী কী চাঞ্চল্য়কর তথ্য় সামনে আসা বাকি? সেটাই এখন দেখার।