কলকাতা: আগেই বায়না ধরেছিলেন জেলে তিনি থাকবেন না। একে তো প্রেসিডেন্সি জেলের একই ওয়ার্ডে থাকা সত্ত্বেও জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যদের সঙ্গে দেখা করতে নারাজ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর এবার নতুন বায়না শুরু রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। জেল সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের জন্য বারবার আবদার করেন জ্যোতিপ্রিয়। 


মূলত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পড়শি। প্রেসিডেন্সি জেলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রীর দুজনেই রয়েছেন একই ওয়ার্ডে। আদালতের নির্দেশে পার্থ খাট পেলেও, জেল সূত্রে খবর, মাটিতে শুতে হচ্ছে জ্য়োতিপ্রিয়কে। মন্ত্রী নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করলেও, জেলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ আছেন। 


জেল সূত্রে খবর, পয়লা বাইশ ওয়ার্ডে ঢোকার সময় আপত্তি জানান প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। মন্ত্রীকে বোঝানোর জন্য তাঁকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার প্রস্তাব দেওয়া হয় জেলের তরফে। তাতে অনীহা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। পাশাপাশি জেল সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের জন্য বারবার আবদার করেন জ্যোতিপ্রিয়। জেল আধিকারিকদের ওপর প্রভাব খাটাতে একাধিকবার রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর নাম নেন। যদিও রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত মন্ত্রীর কোনও অনুরোধ, তর্জন-গর্জনই ধোপে টেকেনি। শেষ পর্যন্ত পয়লা বাইশ ওয়ার্ডের ৭ নম্বর সেলেই ঠাঁই হয় জ্যোতিপ্রিয়র। 


 গত রবিবার সন্ধেয় জ্যোতিপ্রিয়কে যখন ওই সেলের সামনে আনা হয়, তখন তিনি চেঁচিয়ে  ওঠেন। বলেন,' আমি এই সেলে থাকব? আমি রাজ্যের মন্ত্রী।জেল রাজ্য সরকারের আওতায়। আমি এই সেলে থাকব না। আমার শরীরের বাঁ দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। আমাকে SSKM-এ পাঠিয়ে দেওয়া হোক।' পাল্টা জেলকর্মীরাও জানিয়ে দেন, তাঁর জন্য এই সেলই বরাদ্দ করা হয়েছে। তাঁকে থাকতে হবে সেখানেই। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা চলে। শেষে সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ, সাত নম্বর সেলে ঢোকেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দুটো কম্বলও দেওয়া হয় তাঁকে।


আরও পড়ুন, পুলিশ সরলেই ফের 'হামলার আশঙ্কা' জয়নগরের ঘরছাড়াদের !


জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে দাবি, এরপর রাতের দিকে শুরু হয় আরেকপ্রস্থ নাটক। ৯টা নাগাদ, মন্ত্রীকে বলা হয়, তাঁর বাড়ি থেকে খাবার চলে এসেছে। খেয়ে নিতে। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় বলেন, তিনি খাবেন না। তাঁর ওষুধ দিয়ে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন। সূত্রের দাবি, জেলের চিকিৎসকের তরফে বলা হয়, খাবার না খেলে ওষুধ দেওয়া যাবে না। শেষমেষ রাত আড়াইটে নাগাদ, খাবার খান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।