দক্ষিণ ২৪ পরগনা: প্রথমে জয়নগরে জোড়া খুন (Joynagar Murder Case)। আর তারপর আগুনে পুড়ে খাক একের পর এক সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বাড়ি (Joynagar Violence)। ঘরের ভিতরের যাবতীয় সামগ্রী পুড়ে ছাই। আতঙ্কে ঘর ছেড়েগিয়েছিলেন নির্যাতিতারা। ২ পার করে অবশেষে তাঁরা ঘিরে ফিরেছেন। মাথার উপর ছাদ নেই, জল নেই, খাবার নেই। কিন্তু তার থেকেও বড় আতঙ্ক রয়ে গিয়েছে মনে। কারণ পুলিশ সরলেই ফের হামলার আশঙ্কা ঘরছাড়াদের। 


'আমরা সিপিএম করি বলে কি অপরাধ করেছি ?'


নির্যাতিতাদের একজন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমাদের উপর আক্রোশটা ছিল ভোটের থেকে সব সময়। আমরা সিপিএম পার্টি করি বলে ওই জন্যে। আমরা সিপিএম করি বলে কি অপরাধ করেছি ? টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি কার্যত সবই চলে গিয়েছে হামলায়। কোথায় থাকবেন ? জিজ্ঞেস করতেই কী করব, খোলা আকাশের নিচেই বলতে বলতে ফের গলা বুজে এল নির্যাতিতার। এরপরেই তিনি মুখ খুললেন আরও। দিলেন বিস্ফোরক বার্তা।


'পা ঝাকা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, পুলিশ কী বাঁচাবে !'


আক্ষেপের সঙ্গে ওই নির্যাতিতা জানালেন,' পুলিশের পা জড়িয়ে ধরেছি। পুলিশ পা ঝাকা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। পুলিশ কী বাঁচাবে ! পুলিশ একদিন এসে বলল না যে, এক ফোঁটা জল দিচ্ছি, এই নাও খাও।' এরপর তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা সিপিএম-র পার্টি অফিসের কাছে সাহায্যের অনুরোধ করেছেন। তারা যতটা পেরেছে করেছে পার্টি অফিসের তরফে। 


  পুলিশ সরলেই ফের 'হামলার আশঙ্কা' 


অপর এক নির্যাতিতা জানালেন, 'আমাদের এই পর্যন্ত খাওয়া নেই, দাওয়া নেই। আমরা এই আতঙ্কের মধ্যে কীভাবে বেঁচে থাকতে পারি ? এইরকম শুনতে পাচ্ছি যে, পুলিশ প্রশাসন কতক্ষণ থাকবে? চলে গেলেই 'আমরা' (হামলাকারীরা) ফের ঢুকব। যেগুলি বাকি আছে সেগুলিকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেব !'


আরও পড়ুন, সামনেই মাধ্যমিকের টেস্ট, আগুনে পুড়ে ছাই জয়নগরের পরীক্ষার্থীর সমস্ত বই


দুই দিন পর অনিশ্চয়তাকে সঙ্গে করে গ্রামে ফিরল নির্যাতিতারা 


আতঙ্ককে সঙ্গী নিয়েই তাণ্ডবের ২দিন পরে গ্রামে ঢুকছেন ঘরছাড়ারা। এদিকে আগুনে পুড়ে ছাই। নেই ছাদ। বাসনপত্র, উনুন সব কিছু ঘরে বাইরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মাথা গোজার ঠাঁইটুকু নেই। বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশ নয়, জানিয়ে দিল পুলিশ। আশ্রয়হীনদের ঠিকানা এখন দক্ষিণ বারাসাতে সিপিএমের পার্টি অফিস।অবশেষে পুলিশের আশ্বাসে ঘরে ফিরছেন ঘরছাড়ারা।ঘরে ফেরার পর নির্যাতিতারা সাংবাদিকদের জানালেন, কীভাবে এর মধ্যে থাকব, আলো, জল, খাবার কিছুই নেই !