কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : রেশন বন্টন দুর্নীতিতে (Ration Distribution Scam) ইডি-র হাতে গ্রেফতার বাবা তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mullick)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সির একাধিক অভিযোগ রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বাবার মতোই অভিযোগের তিরের মুখে তিনি। রবিবার সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে দেখা গিয়েছিল মেজাজ হারিয়ে সংমবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে। আর সোমবার উচ্চশিক্ষা দফতরে নিজের অফিসে বসে প্রথমবারের জন্য মুখ খুললেন জ্যোতিপ্রিয় কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। এবিপি আনন্দে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন, 'তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।' সঙ্গে বললেন, 'এখনও পর্যন্ত নিজেকে অপরাধী মনে করছি না।'
আদালতে যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়, তখন এজলাসেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তখন বাবার মাথায় জল দেওয়া থেকে হাসপাতাল সফর, সঙ্গী ছিলেন মন্ত্রী-কন্যা। রাজ্যের মন্ত্রী এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, 'তিনদিন আগে যা পরিস্থিতি ছিল, তার থেকে ভাল আছেন। অবস্থা স্থিতিশীল। ওঁর সঙ্গে দেখা করেই এখানে (উচ্চশিক্ষা দফতর) এসেছি। আশা রাখি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন।' কালো টাকা সাদা করার মতো মারাত্মক অভিযোগের মুখে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ষড়যন্ত্র-র দাবি করলেও প্রিয়দর্শিনীর কথায়, 'ওঁর বক্তব্য উনি বলেছেন। আমি তো সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত নই। তবে তদন্ত হোক না, দেখা যাক। ইডি আসলে আগে গ্রেফতার করে, তারপর তদন্ত শুরু করে। তদন্ত হোক।'
তিনি নিজেই শুধু তদন্তের সামনে দাঁড়াতে প্রস্তুত বলেই থামেননি প্রিয়দর্শিনী। জানিয়ে দিয়েছেন, 'লিখিতভাবে বাবা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।' প্রসঙ্গত, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই রাজ্যের মন্ত্রীর ইডি হেফাজতের মেয়াদ শুরু হবে আদালতের নির্দেশ অনুসারে। গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, 'একটি মেডিক্যাল ডকুমেন্ট জমা করতে গিয়েছিলাম। যেটা কাল জমা দেওয়া যায়নি। তবে আজ জমা পড়ে গিয়েছে।'
রেশন বন্টন দুর্নীতিতে তাঁরও নাম জড়িয়েছে। ইডির তরফে অভিযোগ উঠেছে, মন্ত্রী-কন্যার অ্যাকাউন্টেও ঢুকেছে টাকা। যা নিয়ে প্রশ্ন করলে প্রিয়দর্শিনীর দাবি, 'ইডি আমাকে এখনও ডাকেনি। তদন্তকারীরা ডাকলে সহযোগিতা করব। ওখানে (সিজিও কমপ্লেক্স) যাব তো ওঁরা (ইডি) ডাকলেই। এখানে (উচ্চশিক্ষা দফতর) স্বেচ্ছায় কাজ করি, তাই ব্যক্তিগত জীবনে কী চলছে তার জন্য লক্ষ লক্ষ ছেলে-মেয়ের ওপর কেন প্রভাব পড়বে। আমাকে রোজই এখানেই পাবেন।'
সামনে উঠে এসেছে শান্তিনিকেতনে বাড়ির কথাও। যা নিয়ে জ্যোতিপ্রিয় কন্যার বক্তব্য, 'বাড়িটি আমাদের পরিবারেরই। অস্বীকার তো করিনি। তবে যা বলা হচ্ছে, তার কতটা সত্যি সেটা তদন্তে সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তাড়াহুড়ো না করে সেই তদন্তেরই অপেক্ষা করছি।'
আরও পড়ুন- কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করার ৩ কোম্পানিরই মালিক জ্যোতিপ্রিয়, চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির