অলোক সাঁতরা, মেদিনীপুর: রকমারি এলইডি-মোমবাতির সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে দিওয়ালি পুতুলের। বৈদ্যুতিক এলইডি আলোর ঝলকানি, রকমারি মোমবাতির মাঝেও চাহিদা রয়েছে মেদিনীপুরের (Midnapore) দিওয়ালি পুতুলের। এই চাহিদার কারণে হাসি ফুটেছে শিল্পীদের। দীপাবলির (Diwali) আগে মির্জাবাজার কুমোরপাড়ায় মাটির পুতুল তৈরির ব্যস্ততা তুঙ্গে।
সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছুই। এক সময় দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদা ছিল প্রচুর। পরবর্তীকালে বাজারে এসেছে রকমারি এলইডি লাইট, সঙ্গে রকমারি চোখ ধাঁধানো মোমবাতি। আধুনিকতার যুগে এসব লাইটকে টেক্কা দিতে গিয়ে জোর ধাক্কা খেতে হয়েছে মাটি শিল্পীদের। তবে সেই প্রাচীন কালের মাটির প্রদীপ ও দেওয়ালি পুতুলের যুগ ফিরে এসেছে। ফ্যাশনের হাত ধরে ফের চাহিদা বাড়ছে মাটির প্রদীপ, দেওয়ালি পুতুলের।
মেদিনীপুরের দেওয়ালি পুতুলের আদল যেন দীপ হাতে ঘাঘরা পরে দাঁড়িয়ে থাকা এক বালিকা। বিভিন্ন শিল্পী বিভিন্ন ভাবে তৈরি করছেন এই পুতুল। কেউ বানাচ্ছেন সারি সারি প্রদীপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুতুল। আবার কেউ তৈরি করছেন একটি প্রদীপ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পুতুলটি। এই দেওয়ালি পুতুল মূলত তৈরি হয় মেদিনীপুরেই। যদিও শিল্পীরা বলছেন, ইদানিং কালে বিভিন্ন জায়গায় কপি হয়ে যাচ্ছে মেদিনীপুরের ঐতিহ্যশালী দেওয়ালি পুতুল।
মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ার শিল্পীদের কথায়, একটা সময় মাটির প্রদীপ ও দেওয়ালি পুতুলের চাহিদা একেবার তলানিতে ঠেকেছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে চাহিদা বেড়েছে মাটির তৈরি দেওয়ালি পুতুলের। শিল্পী মিতালী দাস, গৌতম দাসরা বলেন, “কয়েক বছর আগে একেবারেই চাহিদা ছিল না এই পুতুলের। গত দু-তিন বছর চাহিদা কিছুটা বেড়েছে মেদিনীপুরের দেওয়ালি পুতুলের। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন দেওয়ালি পুতুল কিনতে। অনেকে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছেন বিভিন্ন বাজারে। বিক্রি হচ্ছে বলেই তো লোকজন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর চাহিদা আছে বলেই আমরাও তৈরি করছি।’’
আরও পড়ুন: Kali Puja 2021 : কালী পুজোর দিন মহাকালী রূপে পূজিত হন দেবী কঙ্কালী
মেদিনীপুর শহরের মির্জাবাজার কুমোরপাড়ার প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার এই পুতুল তৈরির কাজ করেন। কালীপুজোর আগে পরিবারের পুরুষ-মহিলা, শিশু সকলেই হাত লাগায় এই কাছে। শিল্পী গৌতম দাস বলেন, “বৈদ্যুতিক রকমারি আলোর ঝলকানির সঙ্গে টেক্কা দিয়ে দাপটের সঙ্গে টিকে আছে দেওয়ালি পুতুল। মানুষ আবার সেই পুরানো দিনে ফিরে আসছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পুতুলের চাহিদা একটু বেশি। এই পুতুল যাচ্ছে খড়্গপুর,শালবনি, বেলদা, তমলুক, হলদিয়া, পাঁশকুড়া, হাওড়াতেও।’’ তিনি বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদল আনতে হচ্ছে পুতুলের আকারেও । এক একটি পুতুলের দাম দশ টাকা থেকে তিনশো টাকা। সাজ, গঠন অনুযায়ী পুতুলের দাম।