অলোক সাঁতরা, মেদিনীপুর : অর্ধ শতক পেরনো মেদিনীপুরের মোটা কালী এবছর ৫১ বছরে পড়ল। মেদিনীপুরের মানিকপুর এলাকার সর্বজনীন কালীপুজো মোটা কালী নামেই পরিচিত। ৫১ বছর আগে এলাকার কয়েকজন যুবক কালীপুজো করার উদ্যোগ নেন। এমন কালী হবে যা তাক লাগিয়ে দেবে, এই চিন্তাধারা থেকে একমাস ধরে এক গরুর গাড়ি খড়, দুই গাড়ি মাটি, পরিমাণ মতো দড়ি, অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয়। ১৩ ফুট উচ্চতার ও ৫ ফুট চওড়ার- সেই কালী প্রতিমা দেখে উদ্যোক্তারাই ঘাবড়ে যান। তখন থেকে এই কালীর নাম মোটা কালী। এত বড় প্রতিমা বিসর্জনের সমস্যা থাকায় গরুর গাড়ির উপরেই প্রতিমা গড়া হয়। পুজো শেষ হলে সেই গরুর গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়া হয় নদীঘাটে।
সেই শুরু। এরপর আর উদ্যোক্তারা অন্য কালী গড়েননি। বার বার মোটা কালী গড়েছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক অসিত দাস জানান, ব্রিটিশ অত্যাচারের প্রতিবাদে অনুশীলন সমিতির সদস্যরা ১৮৩২ সালে মানিকপুর এলাকার একই স্থানে পুজো করতেন। তখন ছিল জঙ্গলে ঘেরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই পুজো বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৬৯ সালে পুনরায় পুজো শুরু হয়।
গত ৫০ বছর ধরে যেখানে মোটা কালীর পুজো হয়ে আসছে সেটি ঘোষেদের জমি। এবছর ঘোষ পরিবার সেই জমি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন। তাই রাস্তার উপর এবারে পুজো হবে।
এদিকে সতীপীঠের একটি পীঠ হল বীরভূমের নলহাটেশ্বরী। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এখানে সতীর নলি বা কন্ঠনালী পড়েছিল। এখানে প্রতিষ্ঠিত দেবীর নাম শেফালিকা। এখানে ভৈরব হলেন যোগীশ। স্থানীয় বাসিন্দারা মাকে - ললাটেশ্বরী বলে সম্বোধন করে থাকেন।
কথিত আছে, কামদেব মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। মায়ের আদেশে তিনি ব্রাম্ভাণী নদীর তীরে ললাট পাহাড়ে নীচে যেখানে মায়ের কন্ঠনালী পড়েছিল তার উপরেই দেবী নলহাটেশ্বরীর মন্দির স্থাপন করেছিলেন। মা এখানে ত্রিনয়নী। মন্দিরের অভ্যন্তরে দেবীর দেহাংশ রক্ষিত আছে। প্রত্যেক দিন দেবীকে স্নান করিয়ে মঙ্গলারতি করার পূর্বে দেবীর প্রস্তরীভূত অঙ্গ ভক্তদের দর্শন করানো হয়।
মন্দিরে সেবাইত সমীর পণ্ডিত বলেন, কালীপুজোর দিন মায়ের বিশেষ পুজো হয়। পাঁচ রকম ভাজা খিচুড়ি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়। আরতি হয়। নিশি রাতে মায়ের পূজা হয়।