কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: কালী পুজো (Kali Puja 2024) উপলক্ষে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির কালীগ্রামে উপচে পড়া ভিড়। ভক্তদের ঢল চোখে পড়ার মতো। দেবীর কাছে মনস্কামনা জানাতে মন্দিরে ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। 


ভক্তদের ঢল: পূর্ব বর্ধমানের মেমারির আমাদপুর গ্রামের নামই মা কালীর নামে। কালী গ্রাম বলেই দূর দূরান্তে পরিচিত এই এলাকা। এই গ্রামে চার বোন রূপে দেবী কালীর পুজো হয়। বড়মা, মেজমা, সেজমা, ছোটমা। এছাড়াও রয়েছেন সিদ্ধেশ্বরী, বুড়িমা, ডাকাত কালী, খ্যাপা মা, আনন্দময়ী মা। বিভিন্ন নাম ও ভিন্ন ভিন্ন রূপে একশোরও বেশি কালী মূর্তির পুজো হয় এই গ্রামে। গ্রামে ঢুকলে প্রথমেই প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার বড় মায়ের দর্শন পাওয়া যাবে। আরও কিছুটা এগোলেই রয়েছেন প্রায় একই উচ্চতার মেজ মা। আশপাশে রয়েছে সেজ মা ও ছোট মায়ের মন্দির।


শুধু কালীই নয়, কালী পুজো দিন এখানে ভৈরবের পুজোও হয়। মেমারির আমাদপুর এক প্রাচীন জনপথ। কথিত আছে, পূর্বে এখান দিয়েই প্রবাহিত ছিল বেহুলা নদী। বর্তমানে তা মজে গিয়ে খালের আকার নিয়েছে। এক সময়ে বাণিজ্য তরী নাকি যাতায়াত করত এখান দিয়ে। সেই সময়ে বণিকদের দস্যুদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াতে হত। সেই সময়ে আমাদপুরে বেহুলা নদীর ধারে ছিল মহাশ্মশান। সেখানে এক সাধু থাকতেন। সেই সাধু শ্মশানে কালীসাধনা করতেন। বণিকরা দস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে এই শ্মশানে কালী মায়ের পুজো দিতেন। শোনা যায়, এর পর থেকেই তাঁরা দস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে শুরু করেন। তখন থেকেই এই দেবীর প্রতি বিশ্বাস জন্মায়। মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পরে দিকে দিকে। 


দুর্গাপুজোয় তেমন কোনও আড়ম্বর হয় না আমাদপুরে। কালীপুজোকে কেন্দ্র করেই উৎসবে মেতে উঠে গোটা গ্রাম। বিসর্জনের সময়ে বড়, মেজ, সেজ আর ছোটমাকে চতুর্দোলায় করে শোভাযাত্রা বের হয়। সারা রাত গোটা গ্রাম ঘোরানোর পরে ভোর বেলায় বিসর্জন হয়। এই দেবীরা ছাড়াও আরও গ্রামে যত দেবী রয়েছেন, সকলকেই একসঙ্গে চতুর্দোলা করে একটির পর আর একটি— এইভাবে লাইন দিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। আশেপাশের জেলা থেকে মানুষজন এসে ভিড় জমান।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।    


আরও পড়ুন: Kali Puja 2024: কালী রূপে ফুল্লরা দেবীর পুজোর আয়োজন, শক্তির আরাধনা লাভপুরে