আর জি কর ধর্ষণ-খুনকাণ্ডে সাজা ঘোষণার পরও, এই ঘটনা নিয়ে চাপানউতোর চলছেই। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্য়াগ চাওয়ায়, নিহত চিকিৎসকের মা-বাবায়ের উপর আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষ থেকে ফিরহাদ হাকিম, সৌগত রায় থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তালিকা ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। তার মধ্যে তীব্র ও তীক্ষ্ণ আক্রমণ শানিয়েছেন মদন মিত্র। তিনি আবার বলে ফেলেছেন,  টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার কথাও।  


একসময়ে মেয়ের ডাক্তার হওয়ার কথা বলতে, গর্বে বুক ফুলে যেত। এখন কপাল চাপড়ান, আর ভাবেন, মেয়েটা কেন ডাক্তার হতে গেল! সেই অভয়ার মা-বাবা যখনই হাইকোর্টে জানিয়েছেন, 'এখনই নয়। এই ঘটনায় জড়িত সবাইকে আগে খুঁজে বের করা হোক', তখনই তাঁদের নিশানা করে আক্রমণ আরও তীব্র হয়েছে। 


নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন শাসক দলের একাধিক নেতা। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারণা, 'আসলে ওঁরা এখন রাজনীতির মধ্যে ঢুকে গেছেন'। কল্যাণ বলেছেন, 'আজকে উনি (ফাঁসি) চাইলেন না, তার মানে উনি কি চাইছেন যে, এরকম তাহলে মৃত্যুদণ্ড হবে না? অন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে যদি ধর্ষণ করে খুন করে, তাহলে তাদের সেই দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না, এটাই উনি চাইছেন? ...আসলে ওঁরা এখন রাজনীতির মধ্যে ঢুকে গেছেন। এটা নিয়ে ওঁরা খুব ভাল রাজনীতি করতে শিখেছেন। আমি দুঃখিত এটা বলার জন্য।' 


কিন্তু, শাসক দলের আক্রমণের মুখে একটুও বিচলিত নয় নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। তাঁদের পাখির চোখ, মেয়ের নির্মম পরিণতির জন্য় যারা যারা দায়ী, তাদের প্রত্য়েককেকে শাস্তির আওতায় আনা। নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবার স্পষ্ট বক্তব্য, সবাইকে তদন্তের আওতায় এনে, বিচারব্যবস্থার আওতায় এনে চরম শাস্তি দেওয়া হোক। 


একই সুরে আক্রমণ করেছেন কুণাল ঘোষও। তাঁর বক্তব্য, 'কেন মুখ্য়মন্ত্রীকে তাঁরা আক্রমণ করেছেন? কেউ কানে মন্ত্র দিচ্ছে। যারা চক্রান্তকারী, তাদের মুখপাত্র  হয়ে গিয়েছেন এই 'অভয়া'র বাবা-মা।...কিছু অন্ধ তৃণমূল বিরোধী বাম, অতিবাম এবং চক্রান্তকারীর কথায় বিভ্রান্ত হয়ে তাঁরা সমানে তাঁদের অবস্থান বদলাছেন। ' 


মদন মিত্রর আক্রমণ আবার আরও শাণিত। 'আপনি পরিষ্কারভাবে বলুন আমি সিপিএম এবং বিজেপি আমায় যেটা বলছে, আমি সেইটা বলছি। তারজন্য আপনি কী চান? ...হ্যাঁ, যদি মনে করেন টাকা চান, টাকা চান। সবকিছু টাকা দিয়ে ঢাকা যায়।' মানে নির্যাতিতার মা-বাবার মুখ সরাসরি টাকা দিয়ে বন্ধ করার কথা বলেছেন মদন ! 


এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও মেয়ের সব অপরাধীদের  খুঁজে বের করে শাস্তির দাবিতে অনড় অসহায় মা-বাবা ।