কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, আশাবুল হোসেন , শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : কামদুনি ( Kamduni Case ) নিয়ে এবার আইনজীবী-বিতর্ক। কামদুনির দোষীদের হয়ে যিনি মামলা লড়েছিলেন, তিনিই শুভেন্দু অধিকারী ( Suvendu Adhikari ) ও বিজেপির ( BJP ) হয়ে অনেক মামলা লড়েছেন বলে দাবি তুলল তৃণমূল ( TMC ) ।
কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ ও নারকীয় হত্য়াকাণ্ডে, দোষী সাব্য়স্ত ৬ জনের মধ্য়ে ৪ জনকেই শুক্রবার, মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তথ্য়প্রমাণের অভাবে মৃত্য়ুদণ্ডপ্রাপ্ত একজনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত। বাকি ২ সাজাপ্রাপ্তের মৃত্য়ুদণ্ড রদ করে, আমৃত্য়ু কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই প্রেক্ষাপটে যখন রাজ্য় সরকারের ভূমিকা ও সিআইডির তদন্ত সব মহলেই প্রশ্নের মুখে, শুভেন্দু অধিকারী যখন রাজ্য় সরকারকে দুষে কামদুনিতে মিছিল করছেন, তখন এক বিশিষ্ট আইনজীবীর প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ তৃণমূলের।
জয়প্রকাশ মজুমদারের অভিযোগ, ' শুভেন্দু অধিকারী আজকে ওখানে গেছেন মুখে একটা মুখোশ পরে। কিন্তু একটা পেছনের ঘটনাতো সামনে আসা দরকার। অভিযুক্তরা, ফাঁসির হুকুম হয়েছিল যাদের, যাবজ্জীবন হুকুম হয়েছিল যাদের নীচের কোর্টে, তারা হাইকোর্টে গিয়ে যখন তাদের কেস অ্য়াপিল হল, তাদের পক্ষে দাঁড়ালেন এমন একজন আইনজীবী, সেই আইনজীবী আবার শুভেন্দুরও আইনজীবী...তার আইনজীবী এখানে অভিযুক্তদের হয়ে দাঁড়িয়েছে। '
এদিকে শুভেন্দুর পাল্টা যুক্তি 'আমার কোনও মামলায় ফিরোজ এডুলজি নেই। আমার বিরুদ্ধে মামলায় আছে'
আইনজীবী প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুণালও । তিনি বলেন, 'আশ্চর্য কথা, আগে শুভেন্দু অধিকারী বলুক ফিরোজ এডুলজি, তাদের আইনজীবী, বিজেপি ঘেঁষা আইনজীবী, ED-র আইনজীবী, তারা কী করছে? অভিযুক্তদের হয়ে ফিরোজ এডুলজির ভূমিকা কী? ভূমিকা কিছু আছে? কী আছে? এই প্রশ্নের উত্তর শুভেন্দু অধিকারী দিক।'
পাল্টা বিশিষ্ট আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি, প্রয়াত কিংবদন্তি আইনজীবী ও বাজপেয়ী সরকারের আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানির একটি বক্তব্য় তুলে ধরে বলেছেন, একজন আইনজীবী, যখন কোনও ব্যক্তিকে এই কারণে রক্ষা করতে অস্বীকার করেন, যে মানুষ তাকে অপরাধী মনে করে, তখন সেই আইনজীবী পেশাগত আচরণের দিক থেকে অপরাধী। আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আরও বলেছেন, সংবিধানের ২২-এর (১)-এ বলা আছে, অভিযুক্ত নিজেকে রক্ষার্থে, তাঁর পছন্দমতো আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারে। এটা অভিযুক্তের মৌলিক অধিকার। আমি একজন আইনজীবী এবং আমার রাজনৈতিক-ঝোঁক আমার মক্কেলদের কাছে গুরুত্বহীন। যখন জয়প্রকাশ মজুমদার হেফাজতে ছিলেন, তিনি তখন তাঁর হয়ে আমাকে আইনি লড়াইয়ের জন্য় বলেছিলেন। যখন কংগ্রেসের মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচী গ্রেফতার হন, তখন তিনি আমাকে তাঁর হয়ে দাঁড়াতে বলেছিলেন। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মন্তব্য়ের অভিযোগে, যখন তৃণমূলের মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল হয়, তখন তিনিও আমায় আইনি লড়াইয়ের জন্য় অনুরোধ করেছিলেন। আমার মক্কেলরা আমার কাছে আসে, কারণ, তাঁরা মনে করেন, আমি তাঁদের স্বস্তি দিতে পারব।
এখন এই বিতর্কের শেষ কোথায় হয় , সেটাই দেখার।