মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঁকসা : নদীর পাড় কাটার ফলে প্লাবিত হতে পারে স্থানীয় অঞ্চল। পাশাপাশি সেতু তৈরির সময় গর্ত করে যে কংক্রিটের পিলার তৈরি হচ্ছে, নদীর পাড় কেটে ভরাট করা হচ্ছে সেই গর্ত। আর তা নিয়েই আপত্তি তুলেছেন স্থানীয় মানুষেরা। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায় অজয় নদের পাড় কাটার অভিযোগে সেতু তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন স্থানীয়রা।


স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁকসার শিবপুরে বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের সংযোগকারী সেতু তৈরির কাজ চলছিল। সেখানেই নদীর পাড় কেটে কংক্রিটের পিলার তৈরির গর্ত ভরাট করছিল ব্রিজ নির্মানকারী সংস্থা। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর পাড় কাটার জন্য যে কোনও সময়েই ভেসে যেতে পারে এলাকা। সেই অভিযোগ তুলেই ব্রিজ তৈরির কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, ব্রিজ তৈরি করার সময় গর্ত করে কংক্রিটের পিলার তৈরি হচ্ছে। আর সেই গর্ত ভরাট হচ্ছে নদীর পাড়ের মাটি দিয়ে। নদীর পাড় কাটার ফলে মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে। ফলে স্থানীয় অঞ্চলে প্লাবনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ব্রিজ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার এই বিষয়ে জানানো হলেও তাঁরা কারও কথায় কান দেননি। উল্টে নদীর পাড় কাটার কাজ তাঁরা চালিয়েই গিয়েছেন। এ বিষয়ে কাঁকসার সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিককে একাধিকবার জানিয়েও কোনও সুরাহা পাওয়া যায়নি। তাই এলাকাকে প্লাবনের হাত থেকে বাঁচাতে ব্রিজ তৈরির কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না নদীর পাড় আবার ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্রিজের কাজ বন্ধ রাখবেন তাঁরা।


এই ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দিলীপ হাঁড়ি। তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও কারণেই হোক না কেন, নদীর পাড় কাটার কোনও নিয়ম নেই। তাঁরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। পাশাপাশি কাঁকসার সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্যও জানিয়েছেন, নদীর পাড় কাটা যাবে না। বিষয়টি তাঁরা খুব শীঘ্রই পূর্ত দফতরকে জানাবেন।


নদীর ভাঙন রোধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। একের পর এক অবৈধ বালিঘাটও বন্ধ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু তারপরও কীভাবে অজয় নদের পাড় কেটে গর্ত ভরাটের কাজ হতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রীকে অমান্য করেই ব্রিজ কর্তৃপক্ষ এমন কাজ করছে?