কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: সুমধুর গান শুনতে শুনতে ভ্যাকসিন নেওয়া। এমনকি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বিশ্রাম করার সময়ও গান শোনা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ দেখে উচ্ছ্বসিত সবাই।


ভ্যাকসিন ক্যাম্প মানেই ভোর থেকে লম্বা লাইন। ভ্যাপসা গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, কখন আসবে আপনার ডাক তার  অপেক্ষা করা। আবার তার মধ্যেই ঠেলাঠেলি, হুড়োহুড়ি। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষকে দুর্ভোগের স্বীকার হতে হচ্ছে।


সেই জায়গায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ছবিটা একেবারেই অন্যরকম। এখানে ভ্যাকসিন নিতে এলে বিনামূল্যে শোনা যাবে গান। কখনও সুমধুর হিন্দি গান, আবার কখনও বা বাংলা আধুনিক অথবা রবীন্দ্রসঙ্গীত। ভ্যাকসিন রুমেই করা হয়েছে গানের ব্যবস্থা। আর সঙ্গীতের ব্যবস্থাতে খুশি সকলে।


ভ্যাকসিনের শুরুর প্রথম দিকে একটা সময় ছিল যখন ডেকেহেঁকেও ভ্যাকসিন নেওয়ার লোক পাওয়া যায়নি। সেখানে বর্তমানে অনেকের কাছেই ভ্যাকসিন অধরা। এই পরিস্থিতিতে এখন দিনে ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষমাত্রা অনেকটা বাড়িয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ।


এখানে বেশ কয়েকটি টেবিল করে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। চিন্তামুক্ত মনে শান্ত পরিবেশে যাতে পুরুষ ও মহিলারা ভ্যাকসিন নিতে পারেন, সে ব্যাপারে এখানে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। 


ভ্যাকসিন কেন্দ্রে ঢোকা থেকে বের হওয়া পর্যন্ত থাকছে রাবীন্দ্রিক পরিবেশ। বাজছে শ্রুতিমধুর রবীন্দ্রসঙ্গীত। অপেক্ষা করা ও ভ্যাকসিন নেওয়া পর বিশ্রামের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত বসার আসন, ঠান্ডা পরিবেশ। স্বাভাবিকভাবেই খুশি ভ্যাকসিন নিতে আসা সকলেই। 


বর্ধমান মেডিকেলের ভ্যাকসিন কর্মসূচি কেন্দ্রের উপদেষ্টা সুব্রত সেন বললেন, এমনিতেই মেডিক্যাল সেন্টারে যাওয়ার কথা ভাবলেই সকলের মনে একটা ভীতি তৈরি হয়। ইঞ্জেকশন নিতেও অনেকে ভয় পান। টেনশন তৈরি হয়। তাই টেনশন মুক্ত পরিবেশ তৈরির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি আমরা। 


বর্ধমান মেডিকেল কলেজের সহকারি অধক্ষ প্রবীর সেনগুপ্ত বলেন, এখান থেকে সকলে ভয়শূন্য মনে ভালো থাকার সংকল্প নিয়ে বাড়ি ফিরুক - সেই ভাবনা থেকেই এই পরিবেশ রচনা। 


বয়স্কদের অনেকেই সংবাদমাধ্যমে ভ্যাকসিন সেন্টারের অব্যবস্থা, অপেক্ষা, অনিয়মের ছবি দেখছেন নিয়মিত। সেই ভীতি নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে এসে এখানকার পরিবেশে আপ্লুত তাঁরা। 


এক কথায় সদিচ্ছা,গঠনমুলক চিন্তাভাবনা মাধ্যমে সবকিছুই যে সম্ভব তা করে দেখাচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ।