কলকাতা: সম্প্রতি 'ওয়াকফ' অশান্তির জেরে মালদা-মুর্শিদাবাদজুড়ে চলেছে 'হিংসা'। এদিকে যখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ঠিক তখনই মর্মান্তিক খবরে ভেঙে পড়েছে গোটা দেশ। কাশ্মীরে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের খুন করেছে জঙ্গিরা। স্বাভাবিকভাবেই এই মুহূর্তে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি ভারত। কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রীর। আর এখানেই উঠে এসেছে হিন্দু ও মুসলিম ইস্যু। এবিপি আনন্দ-র 'যুক্তি তক্কো' অনুষ্ঠানে এই দুটি বিষয়কেই সবার সামনে আনলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, ''কী ঘটল কাশ্মীরে ? ২২ তারিখ। সেই দিন প্রায় ২৬ জন মানুষকে, তাঁদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে, কখনও আই কার্ডের ভিত্তিতে, প্রয়োজনে ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন করে, তাঁদের মৃত্যুমুখে পাঠানো হল। তার আগের দিন ২১ তারিখ, আমি প্রায় ৫ ঘণ্টা মুর্শিদাবাদ জেলায়, ৩৮ ডিগ্রি টেম্পারেচারের মধ্যে বাড়িতে বাড়িতে ঘুরেছি। একই দৃশ্য দেখেছি চন্দন দাসের বাড়ি, হর গোবন্দ দাসের বাড়িতে। বা সেই সময় যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ি গিয়ে গিয়ে দেখেছি। যে শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার জন্য তাঁদের উপর আক্রমণ হয়েছে। তাঁদের মন্দির ভাঙা হয়েছে। ভাঙা শিবলিঙ্গ মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে আমি আমার সঙ্গে নিয়ে এসেছি। প্রয়োজনে, কোনও একদিন সুযোগ পেলে মুখ্যমন্ত্রীকে তা উপহারও দেব, সেই মনষ্কামনা আমার আছে, সেই মনবাসনাও আমার আছে। তবু আমাদেরকে শুনতে হয়, সন্ত্রাসের কোনও ধর্ম হয় না। মুর্শিদাবাদ এবং কাশ্মীর এই দুটিই যেনও কোন ক্ষেত্রে একাকার হয়ে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদে শুনতে হয়েছে, 'শাঁখা সিঁদূর পরেছিস কেন ? খুলে ফেল। আমাদের সঙ্গে চল, তোদের স্বামীদের কুচিকুচি করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ কর। রেহাই পাবি।' এটা মুর্শিদাবাদে শুনতে হয়েছে। কাশ্মীরেও শুনতে হয়েছে, রুদ্রাক্ষের মালা কেন পরছেন, কোরাণ পড়ুন, তাহলে মুক্তি পাবেন।'
সেসময় দাঙ্গা বিধ্বস্ত সামশেরগঞ্জে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। স্থায়ী BSF ক্য়াম্প থেকে NIA তদন্ত, বিজেপির রাজ্য় সভাপতির কাছে একাধিক দাবি জানিয়েছিলেন সেখানকার মানুষ। জাফরাবাদে নিহতদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। হিন্দুদের ওপর অত্য়াচারের অভিযোগ তুলে, মুখ্য়মন্ত্রী কেন মুর্শিদাবাদ এলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সেসময় সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা জবাব দিয়েছিল তৃণমূল। ধুলিয়ানের জাফরাবাদে, বাড়ি থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে-থেঁতলে খুন করা হয়েছিল বাবা-ছেলেকে!সুকান্ত মজুমদার সেসময় বলেছিলেন, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় তো যা এখানে প্রকল্প চালাচ্ছে হিন্দুদের থাকতে দেবেন বলে তো মনে হচ্ছে না। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়েরও এখানে আসা উচিত ছিল। তৃণমূলের লোকেরাই দাঙ্গা করেছে। পুলিশই নাকি এদেরকে বলেছে যে এখানে দিদির রাজত্বে BSF ক্য়াম্প হবে না।'