বাপন সাঁতরা, খানাকুল: দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কর্মী এক্রামূল আলির মৃত্যুর পর শুক্রবার সকাল থেকেই থমথমে খানাকুলের মহিষগোট এলাকা। গোটা এলাকা জুড়ে মোতায়েন পুলিশ। এর জেরে ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। শোকের ছায়া এলাকাজুড়ে। খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে মৃতের পরিবারের তরফে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে। দ্বন্দ্ব চলছিল তৃণমূল দুই নেতা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আলি হোসেন বনাম পঞ্চায়েত সদস্য জুম্মাত আলির। আর তা থেকেই বৃহস্পতিবার দফায় দফায় সংঘর্ষের অভিযোগ। মারধর করার অভিযোগ একে-অপরের বিরুদ্ধে। এক্রামূলকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর পঁয়ত্রিশের এক্রামূল আলি পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিলেন। পাশাপাশি তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন বলেও দাবি পরিবারের। তাঁর পরিবারে রয়েছে স্ত্রী তুহিনা খাতুন ও দু'বছরের কন্যা সন্তান। তাদের সঙ্গে নিয়ে আলাদা থাকতেন এক্রামূল।
কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক হিংসা তাঁর প্রাণ কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। মৃত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী তুহিনা খাতুনের দাবি, তৃণমূল করতেন তাঁর স্বামী। তাঁকে মারধর করা হয়েছে।
অন্যদিকে, মৃত তৃণমূল কর্মীর দাদা তথা প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আলি হোসেনের অভিযোগ, এলাকায় দখল নিতেই হঠাৎ তাঁদের উপর হামলা চালায় জুম্মাত আলির লোকজন। এক্রামূলকে বেধড়ক মারধর করে। আর তার জেরেই মৃত্যু হয়।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য জুম্মাত আলি। তাঁর পাল্টা দাবি, তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। এখন অসুস্থতার কারণে মৃত্যুকে ঘিরে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে দুই পক্ষই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করলেও এই ঘটনায় দলের কোনও যোগ নেই। পারিবারিক অশান্তির জেরে ঘটনা ঘটে বলে দাবি খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল ব্লক সভাপতির। যদিও ঘটনার পরেই এলাকায় যায় খানাকুল থানার পুলিশ। তারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বৃহস্পতিবার মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও দায়ের না করলেও শুক্রবার খানাকুল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
যদিও পুলিশ গতকালকেই অশান্তির অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার তাকে আরামবাগ মহকুমা আদালতে পাঠানো হয়। পাশাপাশি খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।