কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ কবিতা অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ সামনে এসেছে। কবিতা উৎসব না হওয়ায় ক্ষুব্ধ কবিদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়েছেন ৫৫ জন। সেখানে কবিতা উৎসব বন্ধ হওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন তাঁরা। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কবিতা অ্যাকাডেমির সভাপতি কবি সুবোধ সরকার। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। যে বা যাঁরা এই অভিযোগ করছে তা প্রমাণ করতে না পারলে শাস্তি পেতে হবে। 

গত আর্থিক বর্ষে কবিতা উৎসব না হওয়া থেকে কবিতা পাঠের জন্য টাকা চাওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে। রাজ্য সরকারের স্বশাসিত সংস্থার বিরুদ্ধেই অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসতেই সরব হয়েছেন বিশিষ্টরা। পবিত্র সরকার, মন্দাক্রান্তা সেন-সহ ৫৫ জন মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছেন। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কবি সুবোধ সরকার। কবিতা অ্যাকাডেমির সভাপতি সুবোধ সরকার বলেন, "যদি কোনও সদস্যের নাম করে বা আমার নাম করে কোনওরকম কোনও কথা বলে থাকেন, এবং যদি অংশগ্রহণকারী শিল্পীর কাছ থেকে কেউ টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিক। অর্থাৎ পুলিশকে বলুন। আমার অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে যা বলছে শুনে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি। প্রমাণ দিতে হবে। যদি প্রমাণ দিতে না পারে তাহলে তাঁকেও শাস্তি পেতে হবে। এটার টার্গেটটা মূলত কবিতা অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে। কারণ তার সভাপতি সুবোধ সরকার, চাকরিহারাদের মঞ্চে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ওখানে বলেছিলাম ভারতের সবথেকে মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন থেকে আমার বিরুদ্ধে যা শুরু করেছে, বাম নিশানা। সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন, মিথ্যাচার করা হচ্ছে। তদন্ত করে দেখুন। যা এসব রটাল তাঁদের কিন্তু শাস্তি পেতে হবে।'' 

ঠিক কী অভিযোগ? 

এবিষয়ে কবি ও অধ্যাপক অংশুমান কর বলেন, "আমরা বাধ্য হলাম চিঠি লিখতে। খবরে প্রকাশ পেয়েছিল যে এই অভিযোগগুলো আসছে। আবৃত্তির যে তালিকা তাতে নজর রাখলে অভিযোগ বোঝা যাবে। গত আর্থিক বর্ষে এই প্রথম কবিতা উৎসব হল না। সরকারের তরফে নাকি অনুমতিই পাওয়া যায়নি। প্রথম যে অভিযোগ সামনে এসেছে বিভিন্ন কবিতার দলকে বা এককভাবে কাউকে আবৃত্তি করার সুযোগ করে দেওয়া হবে এই মর্মে টাকা তোলা হচ্ছে। এটা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার পর কবি জানান, তাঁদের থেকেও টাকা চাওয়া হয়েছে। কেউ আবার ভয়ে হোয়াটসঅ্যাপে জানাচ্ছেন তাঁর থেকেও টাকা চাওয়া হয়েছে, কিন্তু নাম যেন প্রকাশ্যে না আসে। অভিযোগ, কবিতা অ্যাকেডেমির ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু কবি নাকি এই টাকা তোলার কাজের সঙ্গে যুক্ত। গতবছরের উৎসবের যে তালিকা তাতে ১৮ জন মাত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। বিশেষত তরুণদের মধ্যে যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখতে হয়েছে। সভাপতি ব্যক্তিগতভাবে কখনও অভিযোগ জানাইনি। তবে অনেকেই তাঁকে এই অভিযোগ জানিয়েছেন।''