পার্থপ্রতিম ঘোষ, রাজারহাট: কলকাতায় ফের হানি ট্র্যাপের ফাঁদ। পুলিশ অফিসার পরিচয়ে সেক্স র‍্যাকেটে নাম জড়ানোর কথা বলে মোটা টাকা আদায়ের ছক বানচাল। রাজারহাটের সাপুরজি কমপ্লেক্স থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করল লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন নাবালক।


অভিযোগকারীর দাবি, কলকাতা পুলিশের ইনস্পেক্টর পরিচয়ে তাঁকে ফোন করে সেক্স র‍্যাকেটে নাম জড়িয়েছে বলা হয়। এরপর বিষয়টি মিটমাটের প্রস্তাব দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হয়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য পুলিশের ভুয়ো পরিচয়পত্রের ছবিও পাঠানো হয় বলে অভিযোগ।


তদন্তে নেমে রাজারহাটের সাপুরজি আবাসনে হানি ট্র্যাপের সন্ধান পায় পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, এই ধরনের সেক্সটরশনের ক্ষেত্রে এখন ‘ভরতপুর গ্যাং’ নামে অপরাধীদের এক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এক্ষেত্রে উঠে এসেছে বিহারের একটি গ্যাংয়ের নাম। ধৃতরা সকলেই বিহারের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। 


বেশ কয়েকমাস আগে এক নামী অভিনেতার আপ্ত সহায়কের আত্মহত্যার খবরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল কলকাতায়। কিন্তু কেন আত্মঘাতী হন তিনি? তা নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে পুলিশের। প্রকাশ্যে আসে তোলাবাজির ভয়ঙ্কর এক রূপ। যার নাম সেক্সটরশন বা হানি ট্র্যাপ। যৌন সম্পর্কের টোপ দিয়ে আপনাকে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করে মোটা টাকা আদায় করা। এটাই লক্ষ্য প্রতারকদের। 


চাঞ্চল্যকরভাবে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধুত্বের নামে সেক্সটরশনের এমন অনেক অভিযোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। সোশাল মিডিয়ার রমরমার যুগে সেই প্ল্যাটফর্মেই ফাঁদ বিছিয়ে দিচ্ছে অপরাধীরা। প্রথমে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে অচেনা কারও ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। সেই রিকোয়েন্স অ্যাকসেপ্ট করার পরে শুরু হয় কথোপকথন। এরপর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চাওয়া হয়। সেই নম্বর দিয়ে দিলেই আসে ভিডিও কল। ভিডিও কলে সরাসরি যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব দেওয়া হয়।আর সেই ফাঁদে পা দিলেই অপরাধীদের মিশন অ্যাকমপ্লিশড!


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ধরনের সেক্সটরশনের ক্ষেত্রে এখন ভরতপুর গ্যাং নামে অপরাধীদের এক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের কাজের ধরন মারাত্মক! বিভিন্ন শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের ছবি ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সেই ছবি দিয়ে তারা হোয়াটসঅ্যাপ প্রোফাইল বানায়। তারপর নির্দিষ্ট ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপে কল করে মোটা টাকা চাওয়া হয়। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই সরাসরি হুমকি।


যে অভিনেতার আপ্ত সহায়ক আত্মঘাতী হয়েছিলেন, তিনিও সেই গ্যংয়ের ফাঁদে পা দেন বলে জানতে পারে পুলিশ। তাই ইন্টারনেটে সাবধান!