কলকাতা: আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি বকেয়া DA-এর দাবিতে এবার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের হুঁশিয়ারি দিল বিরোধী দলগুলির সরকারি কর্মচারী সংগঠন। প্রয়োজনে ধর্মঘটের রাস্তায় যাওয়ার ভাবনা কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লিয়িজ-এর । পাল্টা জবাব শাসক দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠন।
অবিলম্বে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মঙ্গলবার আলিপুরে অবস্থান আন্দোলনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। ৩০ অগাস্ট ২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির। ৭ দিনের মধ্যে ডিএ-জট না কাটলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠন।
ক্লাবকে অনুদান বিতর্ক: রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, এতগুলো ক্লাবকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে, অথচ আমাদের বকেয়া ডিএ দিচ্ছে না। রাজ্য সরকারি (Government Employee) কর্মীদের DA বকেয়া। তারই মধ্যে সরকারের পুজোর অনুদান ৫০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। অনুদান পাবে ৪৩ হাজার পুজো কমিটি।
প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা: মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা (Opposition)। তাদের প্রশ্ন, সরকার যেখানে কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দিতে পারছে না, সেখানে এই খয়রাতি কেন? এই প্রেক্ষিতে এবার ধর্মঘটের রাস্তায় হাঁটার হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেসের কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লিয়িজ।
কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লিয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা তো নোটিস দিয়েছি. আমরা কোর্টে যাব। ৭ দিন সময় দিয়েছি, আগামীকাল ঠিক হবে আন্দোলের রূপ ঠিক হবে। মিটিং, মিছিল পুজোর আগেই বড় আন্দোলন। ধর্মঘটের পথেও যেতে পারি।
প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাম, বিজেপিও। মঙ্গলবার জাজেস কোর্ট রোডে বকেয়া ডিএর দাবিতে বিক্ষোভ অবস্থান করে কো-অর্ডিনেশন কমিটি।
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, আমরা তো চারঘণ্টা করলাম। ৩০ তারিখ ২ ঘণ্ট কর্মবিরতি করব। সরকারকে স্তব্ধ করে দেব। বকেয়া ডিএ দিয়ে দিতে হবে। এতগুলো ক্লাবকে অনুদান দিল, ডিএ দিচ্ছে না এরও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
পাল্টা জবাব: এ প্রসঙ্গে পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক দলের কর্মচারী সংগঠন। পরিসংখ্যান বলছে, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা এখন DA পান তাঁদের মূল বেতনের ৩৪ শতাংশ। রাজ্যের কর্মীরা পান মূল বেতনের ৩ শতাংশ। সেই হিসেবে এই মুহূর্তে কেন্দ্র ও রাজ্যের কর্মীদের মধ্যে DA-র ফারাক ৩১ শতাংশ।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী খুব চালাকি করে ঝুলিয়ে রেখে টাকা দেওয়ার আগে সে কোর্টে চলে যাচ্ছে কায়দা করে, সরকারি কর্মচারিদের পুজোর মুখে ডিএ বন্ধ করে দিতে চাইছে। সরকারি কর্মিদের বেতন তো পাওয়া উচিৎ , অবশ্যই পাওয়া উচিৎ।এ বাংলায় আজ ভারে মা ভবানি হয়ে গেছে, না আছে বাংলায় শিল্প না আছে রোজগার, তাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আজ ডিএ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। সেখানটাই আজ ন্যার্য অধিকার দেওয়ার দাবিতে যদি সরকারি কর্মচারিরা আন্দোলন করে কোর্টে যায় নিশ্চয় সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানান উচিৎ।
চলতি বছরের ২০ মে, সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA ৩ মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। নির্দেশ, পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। বকেয়া DA নিয়ে আদালতের নির্দেশ মানেনি রাজ্য সরকার। এই অভিযোগে সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ইউনিটি ফোরাম। ২৫ অগাস্ট এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।