উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা: মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে শুনানি শেষ রাজ্য বিধানসভায়। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করতে পারেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। অন্যদিকে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া ৪ বিধায়ককে নিয়েও আজ থেকে শুনানি শুরু হয়েছে বিধানসভায়।


দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ হবে কি হবে না? তা নিয়েই বিধানসভার অধ্যক্ষের ঘরে শুনানি শেষ। বিধানসভা সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় দিতে পারেন অধ্যক্ষ। শুক্রবার এই মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবীরা। পাল্টা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ, মুকুল রায়ের ট্যুইটার হ্যান্ডলের ছবি দেখিয়ে, শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীরা দাবি করেন, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলেই যোগ দিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক।


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘আজ আমাদের আইনজীবী ছবি, ভিডিয়ো, অডিয়ো সব তথ্য ও প্রমাণ দিয়ে দাবি করেছেন ঢাক- ঢোল- কাড়া- নাকাড়া বাজিয়ে, সংবাদমাধ্যমের কাছে হিরো হয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই যোগ দিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টে আবার হিয়ারিং আছে। সেখানে চূড়ান্ত হবে।'  


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে, কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে বিজেপির টিকিটে প্রথমবার বিধায়ক নির্বাচিত হন মুকুল রায়। তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। কিন্তু, বঙ্গ বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার ১ মাসের মধ্যেই দেখা যায় এই ছবি। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার দাবিতে বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে আবেদন জানান বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।


সংঘাতের আবহেই বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন মুকুল রায়। জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। তাঁকে নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই মাঝেমধ্যেই সকলকে ধাঁধায় ফেলেছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। মুকুল রায় এর আগে বলেছিলেন, "তুমি যদি আমার কাছে জিজ্ঞাসা করতে চাও, তাহলে তো আমাকে সেই দল হিসেবে বলতে হবে, জবাব দিতে হবে, প্রশ্ন - সেই জন্য আপনি বিজেপি দল হিসেবে বলছেন? উত্তর - হ্যাঁ...আমাকে জিজ্ঞাসা করলে তৃণমূল বলব। বিজেপি দরকার হলে বিজেপি বলব।" 


এরই মধ্যে গত ১৭ জানুয়ারি, সুপ্রিম কোর্ট বলে, তাঁরা আশা করছেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের আগেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। মুকুল রায়কে নিয়ে টানাপোড়েনের আবহেই এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া ৪ বিধায়ক। কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায়, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ এবং রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার বিজেপির দাবি ঘিরে শুনানি শুরু হয়েছে এদিন।