সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ফের উদ্বেগজনক হারে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে (COVID Cases)। এমন পরিস্থিতিতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জ্বরের ওষুধের চাহিদাও (Paracetamol Medicines)। তার জেরে চাহিদা এবং জোগানের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা দিতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করেছে। বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যে ওই সব ওষুধের বিক্রি এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে জোগান আর চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য থাকছে না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মুঠো মুঠো জ্বরের ওষুধ খাওয়া এবং বাড়িতে মজুত না করার আর্জি জানাচ্ছেন বিক্রেতারা (Kolkata News)।
করোনা বাড়তেই ওষুধ কেনার হিড়িক
মাঝখানে পরিস্থিতি থিতিতে এলেও, সম্প্রতি নতুন করে করোনার সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করেছে। বাংলা-সহ অন্য রাজ্যগুলিতেও একই পরিস্থিতি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রবিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষও। তাই সামান্য গা গরম হলে অথবা সর্দি কাশি হলে নিজের মতো করে তাঁরা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলছেন বলে অভিযোগ। তাতেই একধাক্কায় চাহিদা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
বিক্রেতাদের দাবি, গত কয়েক দিনের মধ্যে এই জাতীয় ওষুধের বিক্রি এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে জোগান আর চাহিদার মধ্যে দেখা দিচ্ছে বিস্তর ফারাক। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে দাবি তাঁদের। তাঁরা জানিয়েছেন, দু'মাস আগে অর্ডার দেওয়া থাকলেও, মিলছে না ওষুধ।
অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যাদবপুর থেকে এলগিন রোড, এসএসকেএম চত্বরের বেশ কিছু ওষুধের দোকানে যান এবিপি আনন্দের প্রতিনিধিরা। যাদবপুরের এক ওষুধ বিক্রেতা বলেন, "সাত দিন আগেও এমন পরিস্থিতি ছিল না। প্রতিদিন অন্তত ৩০ পাতা করে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। আমার কাছে আর মাত্র ৬০ পাতা পড়ে রয়েছে।"
এসএসকেণ চত্বরের একটি ওষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মাত্র পাঁচটি পাতা অবশিষ্ট রয়েছে। ওই দোকানের বিক্রেতা বলেন, "আমার কাছে আর মাত্র পাঁচ স্ট্রিপ পড়ে রয়েছে। আর কবে আসবে জানি না।"
একই ছবি ভবানীপুর থেকে এলগিন রোডের একাধিক দোকানে। সেখানেও একই দাবি, আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে অনেক। অথচ জোগান নেই। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া কি ঠিক? প্রশ্ন করলে চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এইভাবে ওষুধ কিনে বাড়িতে স্টক করার প্রয়োজন নেই। এটা সেভিংস বা ইনভেস্টমেন্ট নয় যে বাড়বে, তার থেকে ওষুধটা দোকানে থাক, যার দরকার লাগবে, কিনবে। বাড়িতে রেখে দিলে যার দরকার পাবে না।"
চাহিদার জোগান দিতে হিমশিম ব্যবসায়ীরা
চিকিৎসক রাহুল জৈনও এ ব্যাপারে একমত। তিনি বলেন, "এভাবে প্যানিক বায়িং একদম উচিত নয়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খান। কিনে বাড়িতে মজুত করবেন না।" এই প্রথম নয় যদিও। করোনা কালে, এর আগেও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কিনে জড়ো করার ঘটনা সামনে এসেছিল।