কলকাতা: বালিগঞ্জের (Ballygunje) ফার্ন রোডে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী (Bijoya Sammilani) ঘিরে উত্তেজনা। রবিবার সন্ধেয়, কমলা চ্যাটার্জি গার্লস স্কুলে তৃণমূলের তরফে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। বালিগঞ্জের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) ছিলেন আমন্ত্রিত। অভিযোগ, অনুষ্ঠান শুরুর আগেই স্কুল ঘিরে ফেলেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। আসে পুলিশও। দাঁড় করিয়ে রাখা হয় প্রিজন ভ্যান।


বালিগঞ্জে বাবুলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে অশান্তি


বিক্ষোভে সামিল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দাবি, বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়কে এলাকায় দেখতে পাওয়া যায় না। স্কুলের কিছু দূরে রাস্তার উপর জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। সেখানেই কিছুক্ষণ পর বাবুল এসে পৌঁছোন। রাস্তাতেই বিজয়া সম্মিলনী সারেন তিনি। যদিও বাবুলের দাবি, ঘটনায় দলীয় দ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। আলোচনা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে। 


বিজেপি ছেড়ে এসে তৃণমূলের টিকিটে বালিগঞ্জের বিধায়ক নির্বাচিত হন বাবুল। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কেন্দ্র বলেই তার আগে পর্যন্ত পরিচিত ছিল বালিগঞ্জ। সেখানে বাবুলকে দাঁড় করানোয় দলের অন্দরেই ওজর আপত্তি ছিল বলে শোনা যায়। তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখও খোলেন কয়েক জন। তার পর যদিও তেমন কোনও ঝামেলা হয়নি। 


তবে রবিবার বালিগঞ্জে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান ঘিরে অশান্তি সামনে চলে এল। এ দিন বাবুলই কমলা চ্যাটার্জি গার্লস স্কুলে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেন। কিন্তু নিজেদের তৃণমূল বলে দাবি করে স্কুলের সামনে জড়ো হন একদল মানুষ। বাবুলের বিরুদ্ধে 'দূর হটো' স্লোগানও দিতে শোনা যায় তাঁদের। এর পাল্টা বাবুলের অনুগামীরা ফার্ন রোডে জড়ো হন। সেখানে ম্যাটাডোরের সামনেই সম্মিলনী হবে বলে ঘোষণা করেন। 


আরও পড়ুন: Adhir Chowdhury: "আমাদের বলবে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাও, আর ভাইপো চিকিৎসা করাবে আমেরিকায়", কটাক্ষ অধীরের


তাতে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুলিশকে ছুটে আসতে হয়। এলাকায় এনে দাঁড় করানো হয় প্রিজন ভ্যান পর্যন্ত। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা বালিগঞ্জের বাসিন্দা। অথচ বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যাঁরা বাবুলের অনুগামী হিসেবে জড়ো হয়েছেন, তাঁরা সব বহিরাগত। ছ'মাস ধরে বাবুলকে এলাকায় দেখা যায়নি বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। এক মহিলা বলেন, "আমাদের ভোটে জিতেছেন। অথচ এলাকায় আসেননি কখনও।"


সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে বাবুল বলেন, "পাড়ার লোকজন বলছেন, বিক্ষোভকারীরা পাড়ার কেউ নন। আমি তো পাড়ার প্রত্যেককে চিনি না। কী করে বুঝব! এঁদের কাছ থেকেই বিবরণ জানতে হবে। আমার মনে হয় বিষয়টিকে এত বড় করে দেখার কিছু নেই। আমি এসেছি। ক্রিকেট থেকে ফুটবল এবং রাজনীতি, সব জায়গাতেই বিবদমান গোষ্ঠী থাকে। কী সমস্যা, আমি বসে দেখে নেব।"


প্রকাশ্য বিবাদ নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেন বাবুল। তাঁর কথায়, "তৃণমূল একটি দল। এখানে কোনও কাউন্সিলর বা অন্য কারও দলের কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে ক্যামেরার সামনে কটূক্তির অনুমতি নেই। আমরা সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। কিছু বলে থাকলে দল ব্যবস্থা নেবে।"


বাবুলকে ঘিরে অশান্তি নিয়ে কটাক্ষ দিলীপের


এ নিয়ে যদিও কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "তৃণমূল থাকবে আর ঝামেলা থাকবে না, এটা হয় না। সর্বোচ্চ স্তরে খেউড় দেখেছি আমরা। কুণাল ঘোষ-পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে এখন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-তাপস রায়। নিচের স্তরে তো গোলাগুলি চলছে! বিজয়া সম্মিলনীতে ঝগড়া, মারামারি। দলটি পচে গিয়েছে। কিছু মুখপাত্র বড় বড় কথা বলছেন। কোথায় দল, কোথায় সরকার, কিছু বোঝা যাচ্ছে না। কিছু পাওয়ার আশা নেই।"