ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: দু'চাকাই ছিল প্যাশন। ছুটি থাকলেই নিজের বাইক নিয়ে এদিক-ওদিক বেরিয়ে যেতেন। লং ড্রাইভেও গিয়েছেন বহুবার। কিন্তু এবার অন্যরকম ঘটনা ঘটল। দেশের বাড়ি রাঁচিতে, সেখানে গিয়ে ফেরার পথে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলেন কলকাতার যুবক। তবে সন্ধের দিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তাঁর দেহ কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা, দুর্ঘটনাই ঘটেছিল। কিন্তু দেশের বাড়ির পরিচিত রাস্তায় কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা ভেবে পাচ্ছে না পরিবার। 


বাইক ছিল তাঁর প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী। বহুবার বাইক নিয়ে বেরিয়েছেন। এবার সেই দু'চাকার যান নিয়েই নিখোঁজ হয়ে যান বছর তেত্রিশের বাইকার। ২ দিন পরেও তাঁর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। রাঁচির বাসিন্দা বছর তেত্রিশের তন্ময় কুমার। মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত ছিলেন তন্ময়। তাঁর বরাবরই প্রথম পছন্দ ছিল বাইক। নিজের পছন্দের দু'চাকাতেই হিল্লিদিল্লি করে বেড়াতেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে ইএম বাইপাস লাগোয়া তিলজলা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি।


পরিবার সূত্রে খবর, ৭ জুন, বুধবার, তিলজলার ফ্ল্যাট থেকে বাইকে রাঁচিতে দেশের বাড়িতে যান তন্ময়। রাঁচিতে দাদার বাইকের NOC সংক্রান্ত কাজ সারার পর, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ সেখান থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন। স্ত্রীর অভিযোগ, ওইদিন রাত ১২টা ৪০ নাগাদ, তন্ময়ের মোবাইল ফোন করেন তিনি। কল রিসিভ হলেও স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তিনি। 


শেষ কথা কার সঙ্গে?
তন্ময়ের  স্ত্রী শুভস্মিতা মাইতি বলেন, '৮ তারিখ রাঁচিতে মাসির বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে রাত ৮ নাগাদ রওনা দেয়। রাত ১২টা ৪০ -এ শেষবার স্বামীকে ফোন করি। ফোন ধরলেও কথা বলেনি, বাইক চললে হাওয়ার আওয়াজ পাই। ৯ তারিখ সকাল থেকে মোবাইল সুইচড অফ পাচ্ছি।' তন্ময়ের স্ত্রীর দাবি, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে না পারলেও তন্ময়ের এক বন্ধু জানিয়েছেন, ওইদিন রাত ১টা ৪২ মিনিটে তাঁর সঙ্গে কথা হয় তন্ময়ের। সেই সময় নাকি তন্ময় দাবি করেছিলেন, কলকাতা থেকে ১৫০ কিমি দূরে খড়গপূরের কাছে চলে এসেছেন তিনি। তারপর কোথায় গেলেন? কলকাতার অনেকটা কাছে এসেও কী ভাবে ঘটল এমন? এমনই নানা সন্দেহের কথা জানাচ্ছে পরিবার। যুবকের শ্বশুর বিভাংশু মাইতি অবশ্য আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন, 'মনে হয় কোনও অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। অথবা কোনও দুষ্কৃতী তুলে নিয়ে গেছে।'


রাঁচিতে অভিযোগ দায়ের:
পরিবারের দাবি, ঘটনার পর তিলজলা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গেলে তাঁরা আনন্দপুর থানায় যোগাযোগ করতে বলে। আনন্দপুর থানার তরফে আবার রাঁচির স্থানীয় থানাতেই অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপরেই রাঁচিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তন্ময়ের পরিবারের তরফে। তবে বাইকারের সন্ধানে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিল আনন্দপুর থানা। রবিবার সন্ধেয় খবর মেলে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে তাঁর দেহ মিলেছে। 


আরও পড়ুন: ঘন-লম্বা চুল পেতে বাড়িতেই করুন পরিচর্যা, চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন এই পাঁচ উপকরণ