কলকাতা: মেট্রোর কাজের জন্যই বউবাজারে একাধিক বাড়িতে ফাটল (Kolkata Metro/ KMRCL)। এই মর্মে রিপোর্ট জমা দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮টি বাড়ির অডিট করে কলকাতা পুরসভায় (Kolkata Municipal Corporation) এই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা (Jadavpur University)। বউবাজারের (Bowbazar Howse Crack) ওই ১৮টি বাড়ির মধ্যে ন'টির অবস্থা বিপজ্জনক বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। 


বউবাজারে বাড়িতে ফাটলের জন্য দায়ী মেট্রোর কাজ!


কলকাতা পুরসভায় জমা পড়া প্রথম পর্যায়ের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে,  মেট্রোর কাজের জন্য ৪০ মিলিমিটার পর্যন্ত মাটি বসে গিয়েছে। মজবুত নির্মাণ থাকা সত্ত্বেও ১৭০ বছরের পুরনো বাড়িতেও ধরেছে ফাটল। 


মেট্রো পরিষেবা চালু হলে আর ক্ষতি হবে না তো? ফাটলের পর ক্ষতিগ্রস্ত বউবাজারের বাড়িগুলির কী অবস্থা? যাদবপুরের বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চেয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার প্রেক্ষিতেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে ডিজি বিল্ডিং আলোচনা হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।  


মঙ্গলবার এবিপি আনন্দে ফিরহাদ (Firhad Hakim) বলেন, "এটা নিয়ে আমি কিছু বলব না। এটা বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টকে দেওয়া হয়েছে। আমরা আবার কেএমআরসিএলকে ডাকব। এক্সপার্টের সাহায্য নিয়ে তারা যাতে ঠিকমতো ব্যবস্তা নেয়, সেটাই করতে বলব।" যাদবপুরের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, "শুধু পুরনো বাড়িই নয়, নতুন বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপজ্জনক অবস্থা একাধিক বাড়ির। অবিলম্বে বাসিন্দাদের সরানো উচিত।"


আরও পড়ুন: Arjun on Saumitra : "ওয়েট অ্যান্ড সি", সৌমিত্র খাঁকে নিয়ে জল্পনা উস্কে দিলেন অর্জুন


যদিও বিপদ বুঝেও বাড়ি ছাড়তে নারাজ বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, কোনও রকমে মাথাগোঁজার ব্যবস্থা নয়, মেট্রো কর্তৃপক্ষ যত ক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ ভাবে বাঁচার ব্যবস্থা না করে দিচ্ছেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে বেরোবেন না তাঁরা। এলাকার কাউন্সিলর বিশ্রূপ দে-ও মেট্রো কর্তৃপক্ষকে পুনর্বাসনের বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, একাধিক বাড়ি প্রায় জীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। লোকজনকে বার করে আনা অত্যন্ত জরুরি।


২০১৯-এর পর সম্প্রতি বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের একাধিক বাড়িতে ফের ফাটল ধরার ঘটনা সামনে আসে। তার জেরে ফের 'উদ্বাস্তু'-তে পরিণত হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। বাড়ি ছেড়ে ঠাঁই নিতে হয়েছে অন্যত্র। গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ভাঙার কাজও শুরু হলে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় ভবিষ্যৎ নিয়েও। 


বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের দাবি জোরাল হচ্ছে


এই পরিস্থিতিতে মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বার বার এমন ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত এবং পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দ্রনাথ ঝা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় বৈঠক হয় দু'পক্ষের। সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার উপর নজরদারির আশ্বাস দেন তৃণমূল সাংসদ।  সিদ্ধান্ত হয়, বউবাজার বিপর্যয়ে খোলা হবে গ্রিভ্যান্স সেল। সেখানে থাকবেন KMRCL-এর ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা।পাশাপাশি, আইআইটি রুরকি-র বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বউবাজারে সমীক্ষা করানোর কথাও জানান KMRCL কর্তৃপক্ষ।